আট জেলার দরিদ্র মানুষের বড় আশ্রয়স্থল রংপুর মেডিকেল। যন্ত্র নষ্ট থাকায় মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
নজির হোসেনের বাড়ি রংপুর সদরের বড়বাড়ি এলাকায়। বয়স ৭৫ বছর। ৯ সেপ্টেম্বর তাঁর স্ট্রোক হয়। সেদিন তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মস্তিষ্কের নালিতে রক্ত জমাট বেঁধেছে, নাকি রক্তনালি ফেটে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে, তা জানার জন্য সিটি স্ক্যান করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করানো হয়নি। কারণ, দুটি যন্ত্রই বহুদিন ধরে নষ্ট।
১০ সেপ্টেম্বর সকালে নজির হোসেনকে নেওয়া হয় জেল রোডের মেডিকেল মোড়ের বেসরকারি রোগনির্ণয় সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরিতে। সিটি স্ক্যান শেষে তাঁকে ফেরত আনা হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রাত আটটায় সিটি স্ক্যান রিপোর্ট ও ফিল্ম হাতে পান নজির হোসেনের ছেলে মহুবার রহমান।
সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরি থেকে বের হয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঢোকার মুখে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে মহুবার রহমানের কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আব্বাকে হাসপাতালের বাইরে নিতে অনেক ঝামেলা হয়েছে, আব্বারও অনেক কষ্ট হয়েছে। হাসপাতালে যন্ত্র ঠিক থাকলে আমাদের এত দুর্ভোগ হতো না।’
এই চিত্র মোটামুটি সারা দেশের। এ রকম চলছে বহু বছর ধরে।অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক
সিটি স্ক্যান যন্ত্র পরিচালিত হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগ থেকে। বিভাগের প্রধান নাজমুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে সিটি স্ক্যান যন্ত্র দুটি। ২০১৯ সাল থেকে যন্ত্র দুটি নষ্ট।
শুধু দুটি সিটি স্ক্যান যন্ত্র নয়, শত শত যন্ত্র এই হাসপাতালে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, ছোট-বড়-মাঝারি ৫৩৭টি যন্ত্র এই হাসপাতালে অচল হয়ে আছে। এর মধ্যে এমআরআই বা সিটি স্ক্যানের মতো বড় যন্ত্র যেমন আছে, পালস্ অক্সিমিটারের মতো ছোট যন্ত্রও আছে। প্রথম আলো জুলাইয়ের মাঝামাঝি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যন্ত্রপাতির হালনাগাদ যে তথ্য পেয়েছিল, তাতে অচল যন্ত্রের এই সংখ্যা পৃথকভাবে দেওয়া আছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান। এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। বর্তমানে এর শয্যাসংখ্যা এক হাজার। তবে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। প্রধানত পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা—এই আট জেলার মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন এই হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, হৃদ্রোগ বিভাগেই সবচেয়ে বেশি যন্ত্র নষ্ট হয় আছে। ছোট-বড়-মাঝারি ২০৯টি যন্ত্র নষ্ট। এর মধ্যে আবার বেশি নষ্ট কার্ডিয়াক মনিটর। এই বিভাগে ৪৬টি কার্ডিয়াক মনিটর নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
৬৫ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা এই হাসপাতালে সারা বছর দরিদ্র রোগীর ভিড় লেগে থাকে। স্ট্রোক বা হৃদ্রোগ বা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জরুরি চিকিৎসা নিতে এসে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন। জরুরি অনেক পরীক্ষাই এই হাসপাতালে হচ্ছে না বছরের পর বছর। চিকিৎসকদের একটি অংশের দাবি, হাসপাতালের ওপর কারও কোনো নজরদারি নেই। একটি অংশ বলেছে, প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা অনেক সময় এমন যন্ত্র দেন, যা ব্যবহার উপযোগী নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই চিত্র মোটামুটি সারা দেশের। এ রকম চলছে বহু বছর ধরে। তিনি বলেন, হাসপাতালে চাহিদার তুলনায় যন্ত্রপাতির যেমন ঘাটতি থাকে, আবার সরবরাহকৃত অনেক যন্ত্রপাতিও নষ্ট পড়ে আছে। কোনো কোনো যন্ত্রপাতি ছোটখাটো ত্রুটির কারণে দিনের পর দিন অচল পড়ে আছে। আবার যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের দরকার হলেও সেটি করা হয় না। এর মূল্য দিতে হয় রোগীকে।
এই জনস্বাস্থ্যবিদ বলেন, রোগী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করান। এতে তাঁর চিকিৎসা ব্যয় বহুগুণ বেড়ে যায়। শত শত কোটি টাকা খরচ করে যে যন্ত্র কেনা হলো, তা মূলত অপচয় এবং অযথা বিনিয়োগ। সঠিক কর্মকৌশল না থাকায় বছরের পর বছর এমন হচ্ছে।
আব্বাকে হাসপাতালের বাইরে নিতে অনেক ঝামেলা হয়েছে, আব্বারও অনেক কষ্ট হয়েছে। হাসপাতালে যন্ত্র ঠিক থাকলে আমাদের এত দুর্ভোগ হতো না।মহুবার রহমান, এক রোগীর স্বজন
ঝুঁকিপূর্ণ ও জটিল হৃদ্রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা চলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে বা আইসিইউতে। হাসপাতালের আইসিইউতে ১০টি শয্যা। ১০ সেপ্টেম্বর ওই আইসিইউতে গিয়ে দেখা যায়, রোগীদের জন্য আটটি বৈদ্যুতিক পাখা (স্ট্যান্ড ফ্যান) চালানো হয়েছে। এসব পাখার বিকট শব্দে সাধারণ মানুষের টিকে থাকা দায়। কিন্তু আইসিইউতে এসব পাখা ঘোরে ২৪ ঘণ্টা। আটটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থাকলেও চালু দেখা গেছে দুটি।
আইসিইউর ভেতরে ঢুকতেই হাতের বাঁয়ে কয়েকটি যন্ত্র চোখে পড়ে। চিকিৎসকেরা বললেন, এর একটি ইকো-মেশিন, একটি পোর্টেবল এক্স-রে যন্ত্র। যন্ত্রগুলো কেনার পর দেড় থেকে দুই মাস চলেছিল। তারপর থেকে থেকে ধুলাবালু জমছে।
আইসিইউ থেকে বের হলে হাতের বাঁয়ে একটি কক্ষে তালা চোখে পড়ে। দরজায় লেখা সি-আর্ম। সি-আর্ম বিশেষ ধরনের যন্ত্র। এটি কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হলে এর সঙ্গে বিশেষ ধরনের টেবিলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু যন্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সি-আর্ম দিলেও সেই টেবিল সরবরাহ করেনি। ১০ বছরের বেশি সময় সি-আর্ম অব্যবহৃত পড়ে আছে।
ক্যাথল্যাবে গিয়ে দেখা যায়, তিনজন নার্স বসে গল্প করছেন। এনজিওগ্রাম বন্ধ। এই বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে এনজিওগ্রাম যন্ত্রটি অচল হয়ে পড়ে। মাস দুয়েক আগে সেটি চালু হয়। দেড় মাস চলার পর তা আবার নষ্ট হয়েছে। ওই দেড় মাসে দেড় শর বেশি এনজিওগ্রাম করা হয়েছে, ৫০ জনের বেশি রোগীকে স্ট্যান্টিং (হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে রিং পরানো) করা হয়। কিন্তু এখন সেবাটি বন্ধ। যন্ত্র কবে নাগাদ ঠিক হবে, কেউ বলতে পারেননি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, হৃদ্রোগ বিভাগেই সবচেয়ে বেশি যন্ত্র নষ্ট হয় আছে। ছোট-বড়-মাঝারি ২০৯টি যন্ত্র নষ্ট। এর মধ্যে আবার বেশি নষ্ট কার্ডিয়াক মনিটর। এই বিভাগে ৪৬টি কার্ডিয়াক মনিটর নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
হৃদ্রোগ বিভাগের প্রধান হরিপদ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘হৃদ্রোগে আক্রান্ত কোনো রোগীর এনজিওগ্রামের প্রয়োজন হলে আমরা রোগীকে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দিই।’ রংপুর শহরে বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানেও এনজিওগ্রাম হয় না।
এ বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তখন হাসপাতালের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বলা হয়েছিল যে হাসপাতালের চার শতাধিক যন্ত্রপাতি নষ্ট। তখন হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, মন্ত্রী ও মহাপরিচালকের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনের পর অধিদপ্তরের হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট শাখা থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ওই চিঠিতে নির্দিষ্ট ছকে হাসপাতালের যন্ত্রপাতির তথ্য চাওয়া হয়েছিল। সেই চিঠির উত্তরে রংপুর মেডিকেল থেকে অধিদপ্তরে পাঠানো তথ্যে দেখা যাচ্ছে, অচল যন্ত্রের সংখ্যা ৫৩৭।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস আলী প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রীর হাসপাতাল পরিদর্শনের কিছুদিন আগে তিনি পরিচালকের পদে যোগ দিয়েছিলেন। নষ্ট যন্ত্রপাতির তালিকার বিষয়টি তাঁর কাছে খুব একটা পরিষ্কার নয়। তবে প্রতিটি বিভাগ ধরে ধরে যন্ত্রপাতির নতুন একটি তালিকা তৈরি হচ্ছে।
একাধিক জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগ, রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগ, ইউরোলজি বিভাগ ছাড়াও আরও কয়েকটি বিভাগে ভারী যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছিল ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরে। ওই সময় হাসপাতালের সব ধরনের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছিল লেক্সিকন মার্চেন্ডাইজ নামের প্রতিষ্ঠান। ল্যাক্সিকনের মালিক মোতাজজেরুল ইসলামের বাড়ি রংপুরে হলেও সারা দেশের স্বাস্থ্য খাতে ছিল তাঁর ঠিকাদারি ব্যবসা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ওই ঠিকাদার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছিলেন। এসব যন্ত্রপাতির অধিকাংশ এক বছরও ব্যবহার করতে পারেননি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
হৃদ্রোগ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকেরা বলেছেন, হৃদ্রোগ বিভাগ ও রেডিওলজি বিভাগ সাজিয়েছিলেন ওই ঠিকাদার। ওই সময় সামান্যতম বিরোধিতাকারী চিকিৎসক বা কর্মকর্তা এই হাসপাতালে থাকতে পারেননি।
হাসপাতালের একজন অধ্যাপক প্রথম আলোকে বলেন, মোতাজজেরুল ইসলাম এখন সক্রিয় না থাকলেও অন্যরা আছেন। এমন চারজনের একটি দল ‘চার খলিফা’ নামে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে পরিচিত।
মোতাজজেরুল ইসলাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন বলে ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
৯, ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর এই হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, হাসপাতালটি ঠিকভাবে চালানোর জন্য আন্তরিক উদ্যোগ বা প্রচেষ্টার ঘাটতি রয়েছে। যন্ত্রগুলো মেরামত করার উদ্যোগ শুধু চিঠি-চালাচালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। অচল যন্ত্রগুলো সচল করার চেয়ে কিছু মানুষের আগ্রহ নতুন যন্ত্রপাতি কেনার ব্যাপারে।
অন্যদিকে হাসপাতালের পরিচালক নতুন যন্ত্রপাতির চাহিদা জানিয়ে দুটি পৃথক চিঠি পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। একটি চিঠিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ২১৯ ধরনের যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম চাওয়া হয়েছে। অন্য চিঠিতে যন্ত্রপাতির সংখ্যা আরও বেশি। সেসব যন্ত্রপাতির চাহিদা দেওয়া হয়েছে আগামী পাঁচ বছরের জন্য।
এসব চিঠি-চালাচালিতে লাভ নেই নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের আনোয়ার হোসেন বা তাঁর ছেলে রহিম হোসেনের। বাবা ও ছেলে দুজনই কাজ করেন সৈয়দপুরের স মিলে। রহিমের শিরদাঁড়া বেঁকে গেছে, অস্ত্রোপচার করতে হবে। রংপুর মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন তিন সপ্তাহ আগে। চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের দিন বদলাচ্ছেন বারবার। ছেলেকে দেখভালের জন্য বাবাও হাসপাতালে। দুজনের উপার্জনই বন্ধ। হাসপাতালেও অনেক খরচ। এক্স-রেসহ কিছু পরীক্ষা করাতে হয় হাসপাতালের বাইরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে। আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে থেকেই বাপ-বেটা শেষ হয়ে যাচ্ছেন।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আরিফুল হক, রংপুর]