অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রতিবেদকেরা আরও বেশি তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করতে পারেন। তথ্য দিতে কোনো বাধা নেই। যথাযথ তথ্য না পাওয়া গেলে, তথ্য কমিশনে আপিল ও নিষ্পত্তিসংক্রান্ত ধারাগুলোর বিষয়ে প্রত্যেক সাংবাদিকের জানা প্রয়োজন।
বুধবার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে তথ্য কমিশনের সম্মেলনকক্ষে এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন আলোচকেরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন।
‘তথ্য অধিকারে গণমাধ্যম ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এ কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধান তথ্য কমিশনার আবদুল মালেক বলেন, তথ্য অধিকার আইন হয়েছে এক যুগের বেশি হলো। সব নাগরিক এই আইনের সুযোগ নিতে পারেন। কিন্তু সাংবাদিক ছাড়া অন্য কেউ এ আইনে তথ্য পেতে আবেদন করছেন না।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক তথ্য কমিশনার নেপাল চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহার খুবই সীমিত। আইনটি সম্পর্কে অজ্ঞতা বা বিস্তারিত না জানা, তথ্য পেতে বিলম্ব ইত্যাদির কারণে সাংবাদিকদের মধ্যে এ আইনের ব্যবহার কম। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যেহেতু ভুল তথ্য বা গুজব শাস্তিযোগ্য অপরাধ, সে ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহে তথ্য অধিকার আইন ব্যবহার করা উচিত। কারণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিপরীতে তথ্য অধিকার আইন সাংবাদিকদের রক্ষাকবচ হতে পারে।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ। তাঁরা বলেন, সাংবাদিকেরা তথ্য অধিকার আইন সেভাবে চর্চা করছেন না। এটা করা গেলে অনেক বাধা দূর হতো।
কর্মশালায় জানানো হয়, সামনে তথ্য অধিকার আইনের সংশোধনী আসতে পারে। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা তথ্য পাওয়ার সময়সীমা কমিয়ে আনা, তথ্য ফরম পূরণ আরও সহজ করার দাবি জানান। আলোচনায় অংশ নিয়ে ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা তথ্য কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তার নাম থাকতে হবে বলে প্রস্তাব করেন।
তথ্য অধিকার আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তথ্য কমিশনকে আরও বেশি বেশি কর্মশালা করার আহ্বান জানান আলোচকেরা। একই সঙ্গে এসব কর্মশালা কেবল ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরে বেশি করে করার পক্ষে মত দেন তাঁরা।
কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন তথ্য কমিশনের পরিচালক মো. আবদুল হাকিম। শুরুতে তিনি তথ্য অধিকার আইনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, অবাধ তথ্যপ্রবাহ সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন, প্রতিটি কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড সম্পাদনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠাই এ আইনের উদ্দেশ্য।
দলগত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তরের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ কর্মশালা।