সাধারণ মানুষের প্রতি বাবার মতো সমান দরদ অনুভব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই দেশের সব উন্নয়ন পরিকল্পনায় সবার আগে গুরুত্ব পায় মানুষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথেই এগিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সেই দর্শন, লক্ষ্য উঠে এসেছে ‘শেখ হাসিনার দর্শন ভিশন ও নেতৃত্ব, উন্নয়নের চাবিকাঠি’ বইয়ে।
বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উঠে এল এসব মতামত। বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আজ রোববার সকালে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রকাশনা উৎসব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের লেখা বইটির প্রকাশক বেঙ্গলবুকস।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছিলেন। মানুষের ভাত–কাপড়, চিকিৎসার সঙ্গে ভোটের অধিকার প্রয়োজন সেই দর্শন তিনি তৈরি করেছিলেন। তাঁর দর্শনে ছিল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দুটি দিক। মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বাবার দেখানো পথে হেঁটেই যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের লেখা প্রবন্ধের সংকলন নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বইটি। এখানে মোট ২১টি প্রবন্ধ আছে।
লেখকের বক্তব্যে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, শুধু দর্শন থাকলেই হয় না, দক্ষ নেতৃত্ব প্রয়োজন হয় রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য। এর দুটোই আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রী কোনোকিছু হাতে নিলে শক্ত হাতে নেন উল্লেখ করে তিনি জঙ্গিবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্সের উদাহরণ দেন। ১৫ বছর স্থিতিশীলভাবে ক্ষমতায় থাকায় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নকাজকে অভাবনীয় পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পেরেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচকের বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনিসুল হক বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের দিকে তাকালে যেমন দেশের অগ্রগতি বোঝা যায়, তেমনি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মতামত থেকেও স্পষ্ট হয় উন্নয়নের চিত্র। তিনি বলেন, নারীশিক্ষার শক্ত অবস্থান, বাল্যবিবাহের হার কমানো এসবও এগিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশকে, যার সুফল সম্পর্কে জানা যায় দেশের বিভিন্ন জনপদের মানুষের মতামত জানলে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালো পাঠাভ্যাস নিয়ে কথা বলেন আনিসুল হক। বইয়ের একটি অংশ তিনি পড়ে শোনান শ্রোতাদের। তবে দেশের ব্যাংক খাতে আরও নজর দিয়ে অর্থ পাচার, দুর্নীতি হ্রাসের দিকে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, উন্নয়নের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে বোঝা যায়, মুক্তিযুদ্ধ–পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই শ্মশান থেকে সোনার বাংলা তৈরি করেছে। আর সেসব কথাই রয়েছে এ বইয়ের বিভিন্ন প্রবন্ধে। বইয়ের প্রবন্ধগুলো বিষয়ভিত্তিকভাবে ভাগ করে দীর্ঘ আলোচনা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রাসঙ্গিকভাবেই চলে আসে বঙ্গবন্ধুর কথা। বইটি সময়ের ফুট প্রিন্ট উল্লেখ করে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার বিভিন্ন উদাহরণ দেন। দীর্ঘ মেয়াদে উন্নয়নের রূপকল্পের জন্যই দেশের বর্তমান এই অর্জন বলে মন্তব্য করেন শামসুল আলম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দেন বেঙ্গলবুকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হাসান, প্রকল্প প্রধান আজহার ফরহাদ এবং প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক গাজী মনছুর আজীজ। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে বইটি প্রকাশের অভিজ্ঞতা এবং প্রকাশনী হিসেবে পাঠকের কাছে বেঙ্গলবুকসের দায়বদ্ধতার কথা। ‘শেখ হাসিনার দর্শন ভিশন ও নেতৃত্ব, উন্নয়নের চাবিকাঠি’ বইটি এ প্রকাশনীর প্রথম বই বলে জানান তাঁরা।