বাংলাদেশের ফ্যাশন পরিমণ্ডলের পরিচিত ও প্রিয়মুখ এমদাদ হক আজ শুক্রবার দুপুরে মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। আজ এশার নামাজের পর বনানী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর ভাই ইস্তাম্বুল হক।
১৯৬৮ সালে পুরান ঢাকার উর্দু রোডে জন্ম নেন এমদাদ হক। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, ভাইবোন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কয়েক বছর আগে কিডনির জটিলতার কারণে তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। এর পর থেকে তিনি সুস্থই ছিলেন। তবে মাসখানেক আগে হঠাৎ শ্বাসকষ্টের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে লাইফ সপোর্টে রাখা হয়। আজ শুক্রবার বেলা ২টা ১৬ মিনিটে ইন্তেকাল করেন।
এমদাদ হক বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির উত্থানপর্বের একজন সাক্ষীই কেবল নন, বরং একজন সক্রিয় সারথিও। এই শিল্পের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা সেই ১৯৮৫ সালে। সেই সময়ে তিনি অধুনালুপ্ত সাময়িকপত্র বিচিত্রায় প্রদায়ক ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি লেখালিখির মাধ্যমে জড়িয়ে পড়েন বাংলাদেশের দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে স্নাতকোত্তর করে ধরাবাঁধা চাকরিতে না গিয়ে ব্র্যাকের রেশম প্রকল্পে যোগ দেন। এরপর তিনি চলে আসেন গ্রামীণ উদ্যোগে প্রধান পণ্য উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে। পণ্য উন্নয়ন ও নকশার পাশাপাশি পণ্যের বাজার আঁচ করতে পারার অসামান্য ক্ষমতা ছিল এমদাদ হকের। গ্রামীণ উদ্যোগকে একটা জায়গায় পৌঁছে দিয়ে তিনি ছেড়ে দেন। একই সঙ্গে তাঁর বেশ কয়েকজন সহকর্মী মিলে গড়ে তোলেন বাংলার মেলা। তিনি ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম পরিচালক ও ডিজাইনার। ওই সময়ে বাংলার মেলার ঈর্ষণীয় সাফল্যে ছিল তাঁর বিশেষ ভূমিকা।
পরবর্তী সময়ে বাংলার মেলার ডিজাইনার পদ ছেড়ে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের প্রতিষ্ঠান স্টুডিও এমদাদ। প্রথম দিকে একটি আউটলেট থাকলেও পরে নিজের বাসাতেই কাজ করতেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে এমদাদ ডিজাইন করতেন পুরুষদের পোশাক। বাংলাদেশের ডিজাইনারদের তৈরি বিয়ের পোশাককে জনপ্রিয় করেছেন তিনি। তাঁর ডিজাইন করা পোশাক প্রদর্শিত হয়েছে দেশে ও বিদেশে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই তিনি ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশের সহসভাপতি।