ছাদখোলা বাসে ঘুরল পথশিশুরা, দেখল পদ্মা সেতু
সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের আক্ষেপ থেকে রাতারাতি একটি দোতলা বাসকে ছাদখোলা বাসে পরিণত করা হয়। সরকারের পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি এ বাস পুনরায় যাত্রীবাহী বাসে পরিণত করবে, এমনটাই পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ছাদখোলা বাসের আবেদন আছে, এ বিবেচনায় বাসটি ছাদখোলাই রেখে দেওয়া হয়। নতুন করে আরেকটি বাসের ছাদ খোলা হয়। এবার শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে একটি ছাদখোলা বাসে এক ভিন্ন রকম আনন্দভ্রমণের আয়োজন করেছে বিআরটিসি। ৪০ জন পথশিশুকে আলোচিত পদ্মা সেতু দেখাতে নিয়ে যায় তারা।
বিআরটিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের ৪০ জনকে আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিলে বিআরটিসির বাস ডিপো থেকে ছাদখোলা বাসে তোলা হয়। সেখান থেকে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে জাজিরা প্রান্ত হয়ে পুনরায় ঢাকার দিকে ফেরত আসে। এরপর তাদের জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা দেখিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন ঘুরিয়ে মতিঝিলে ফেরত আনা হয়।
এ ভ্রমণে শিশুদের লাল-সবুজ টি–শার্ট ও ক্যাপ দেওয়া হয়। সকালে শিশুদের নাশতা করা হয়। বাসে ভ্রমণের সময় চিপসসহ হালকা জলখাবার দেওয়া হয়। পরে পোলাও, মুরগির রোস্ট, খাসির মাংসসহ নানা পদ দিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ানো হয়।
বাসে শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা বিআরটিসির এক কর্মকর্তা বলেন, ভ্রমণ, খাবারদাবার এবং তাদের যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতে শিশুরা পুরোটা সময়ই আনন্দ করেছে। তারা সারাক্ষণ হইহুল্লোড়ে মেতে ছিল। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তাদের আনন্দ দেখে আমাদেরও খুব ভালো লেগেছে।’
বিআরটিসি সূত্র জানায়, শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে পথশিশুদের নিয়ে আনন্দভ্রমণ আয়োজনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ কমলাপুরে সমাজসেবা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারাই ৪০ পথশিশুকে এ ভ্রমণের জন্য বাছাই করে। খাবার, ঘোরানোসহ যাবতীয় আয়োজন করে বিআরটিসি।
বিআরটিসি সূত্র জানায়, সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের জন্য যে বাসটির ছাদ খোলা হয়, সেটির সঙ্গে আরেকটি বাসের ছাদ খোলা হয়েছে। এগুলো পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা আছে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের।
সকালে পথশিশুদের ভ্রমণ আয়োজন উপলক্ষে মতিঝিল বাস ডিপোতে ছোট একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলামসহ সংস্থার ঊর্ধ্বতন অন্য কর্মকর্তারা।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, এর অধীন বিভাগগুলো নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এর একটা ছিল পথশিশুদের আনন্দভ্রমণ। পদ্মা সেতু দেশের আলোচিত একটি স্থাপনা। সমাজের বিত্তবান অনেক ব্যক্তি তাঁদের সন্তানদের দেখাতে নিয়ে গেছেন, ছবি তুলছেন। পথশিশুদের পক্ষে তো সেই সুযোগ নেই। এ জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর নির্দেশে তাঁরা এ আয়োজন করেছেন। পথশিশুদের আনন্দের অংশ হতে পেরে তাঁরা আনন্দিত।