হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী

ডেঙ্গুতে এক দিনে ৩০৩ জন হাসপাতালে

দেশে ডেঙ্গু নিয়ে আরও ৩০৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এ সময় ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি। গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৭৪২। এ সময় এডিস মশাবাহিত এই রোগে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।

গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গু নিয়ে সবচেয়ে বেশি ১০৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে।

অপর দিকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯১, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ৫০, বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩০, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৫, ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে ৫ জন, খুলনা বিভাগের হাসপাতালে ৩ জন ও ঢাকা বিভাগের হাসপাতালে ১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।

গত জানুয়ারি থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ হাজার ৯৫৯ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।

বর্ষাকালে সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। চলতি বছর এখন পর্যন্ত গত বছরের চেয়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ কম; কিন্তু প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে যে বৃষ্টি হচ্ছে, এর কারণে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদ বে–নজীর আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন ডেঙ্গুর ভরা মৌসুম। এর মধ্যে বৃষ্টি এর প্রকোপ ত্বরান্বিত করেছে। বৃষ্টির ফলে পানি জমে মশার ঝুঁকি বাড়ছে। এখনই যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া যায়, তবে আগামী মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে।

ডেঙ্গু বর্ষাকালে বেশি হলেও ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশের সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল অক্টোবর মাসে। এবারও বর্ষা মৌসুমের পর ডেঙ্গুর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে মনে করেন বে–নজীর আহমদ। তিনি বলেন, জুলাই মাস থেকে চলা আন্দোলনের মধ্যে সিটি করপোরেশনগুলোর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অনেকটাই কমে গিয়েছিল। এখন তা বাড়াতে হবে গুরুত্বের সঙ্গে।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। তাঁদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ নারী ও ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ। এ সময় ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে।

২০০০ সালে দেশে প্রথম বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর থেকে প্রতিবছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ছিল। ব্যতিক্রম ছিল ২০২০ সাল। ওই বছর করোনা মহামারি দেখা দেয়। দেশে ডেঙ্গু রোগী ছিলেন কম, সরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যু ছিল না। করোনা মহামারি শেষ না হতেই ২০২১ সাল থেকে আবার ডেঙ্গু বাড়তে থাকে।