তোমরা আগামীর বিশ্ব। কথায় নয়, বাংলাদেশের জয় তোমাদের করে দেখাতে হবে। আকাশছোঁয়া স্বপ্ন নিয়ে এগোতে হবে। মানবিক মানুষ হতে হবে।
নীলফামারীতে গতকাল মঙ্গলবার শিখো-প্রথম আলো জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন অতিথিরা।
নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে সকাল আটটায় কুয়াশা ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে শুরু হয় এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের কার্যক্রম। এতে অংশ নিতে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া ১ হাজার ৩২০ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক অভিভাবক ও সুধীজন। অনলাইনে নিবন্ধন করা এ শিক্ষার্থীরা এসেছিল জেলার ছয় উপজেলা থেকে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব। এ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দিতে উপস্থিত ছিলেন জেলার গুণীজনেরা।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর নীলফামারী প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান। নীলফামারী বন্ধুসভার সাবেক সহসভাপতি রিফাত আরা প্রধান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে জেলা সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর কবির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা আগামীর বিশ্ব। আগামীর বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে হবে। বাংলা ভাষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ভাষা জানতে হবে। তোমাদের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন নিয়ে এগোতে হবে।’
নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুল আনোয়ার বলেন, ‘তোমাদের মানবিক মানুষ হতে হবে। ধৈর্য এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে মানুষ বড় হয়।’
মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সারোয়ার মানিক বলেন, ‘ধৈর্য, নিষ্ঠা আর অধ্যবসায় থাকলে ভালো মানুষ হওয়া যায়, আমাদের ভালো মানুষ হতে হবে।’
নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। নিজেকে ভালো রাখতে বন্ধু যাচাই করে মিশতে হবে।’
প্রথম আলোর উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি বলেন, ‘ভালো ফলের জন্য তোমাদের শিক্ষকদের অবদান রয়েছে, বাবা–মা তো আছেনই। আমরা বাংলাদেশের জয় চাই, সেটা বললে হবে না, এটা করে দেখাতে হবে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, তিন ‘ম’—মিথ্যা, মুখস্থ ও মাদককে ‘না’ বলতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নীলফামারী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. নূরুল করিম।
অন্যান্য কৃতী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এ অনুষ্ঠানে এসেছে ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মহেশচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়া ইমন ইসলাম। জন্মগতভাবে দুই পা অচল এ শিক্ষার্থীকে মঞ্চে উঠতে হয়েছে হাঁটুতে ভর করে। নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে সে বলে, ‘ভালো ফল করতে আমার শিক্ষকেরা সহযোগিতা করেছেন। আমি যেন দেশের জন্য কিছু করতে পারি, এ জন্য আপনারা দোয়া করবেন। এখানে আসার পর খুব ভালো লাগছে।’
দিনব্যাপী সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল ক্রেস্ট, সনদ, প্রথম আলো ই-পেপার (১ মাস) ও চরকির (১৫ দিন) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, শিখোর সৌজন্যে বিনা মূল্যে কোর্স ও ফ্রেশ ব্র্যান্ডের স্নাকস বক্স।
দেশের ৬৪ জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় চলছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা কার্যক্রম। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে ফ্রেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।