বায়ুদূষণ কমাতে হলে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার সকালে ‘বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা
ছবি: সংগৃহীত

সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হয় নির্মাণকাজ ও ইটভাটা থেকে। এগুলো দেশের মোট বায়ুদূষণের ৬০ শতাংশের উৎস। এসব কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রভাবশালীরা। নিজেদের মুনাফার জন্য কোনো নিয়ম–নীতি মানেন না তাঁরা। তাই বায়ুদূষণ কমাতে হলে এসব ব্যাপারে নীতিনির্ধারণে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে।

মঙ্গলবার ‘বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মূল বক্তব্যে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘আমাদের অবহেলার জন্য প্রতিনিয়তই এই বায়ুমণ্ডল দূষিত হচ্ছে। বায়ু দূষণ বিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদন এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স ২০২৩–এ বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।’

বাপার সহ–সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান এম শহীদুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ, নদী, বায়ু, শব্দ, দৃষ্টি—সব দূষণে জর্জরিত মানুষ। অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে মুনাফাখোরেরা দেশের মানুষকে বায়ুদূষণের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে মেরে ফেলছে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, বায়ু ও পরিবেশ ধ্বংসের জন্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, আমলা ও মন্ত্রী-এমপি দায়ী। দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য তাঁদের মুনাফা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাপার সহ–সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘বর্তমানে আমরা জনস্বাস্থ্যকে আত্মাহুতি দিতে দেখছি। সরকার পুঁজিপতিদের কাছে নত হয়ে পরিবেশ দূষণকারীদের সব দাবি মেনে নিচ্ছে। এর ফলে মানুষের গড় আয়ু কমছে আট বছর করে।’

সংবাদ সম্মেলনে বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, গত এক দশক ধরে ব্যবহার করা সব ধরনের মুঠোফোন ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর ব্যাটারির কীভাবে ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এবং এগুলো থেকে কী পরিমাণ দূষণ হচ্ছে, তার সঠিক হিসাব বের করতে হবে। আর বাপা জাতীয় কমটির সদস্য গাউস পিয়ারী অভিযোগ করেন, দূষণকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন প্রয়োগের উদ্যোগ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে মোট ১৩টি সুপারিশ ও দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নির্মাণকাজের সময় নির্মাণস্থল ঘিরে রাখা, অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রচুর গাছ লাগানো, পরিবেশ সংরক্ষণে মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধির মতো সুপারিশ ও দাবিগুলো রয়েছে।