নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হামলায় আহত ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম মাসুম। আজ সন্ধ্যায়
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হামলায় আহত ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম মাসুম। আজ সন্ধ্যায়

ছাত্রদল–শিবির পাল্টাপাল্টি হামলা–গুলি, ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইব্রাহিম মাসুম (২৭) নামের ছাত্রদলের এক নেতা গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন আরও ছয়জন। ছাত্রদলের আহত নেতাকে নোয়াখালীর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আমানউল্যাহপুর ইউনিয়নের মহেশপুর ও কাঁচিহাটা সর্দার দিঘির পাড় এলাকায় কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি হামলা হয়। খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুরের দিকে ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মহেশপুরে জামায়াতের সমর্থক মো. সোহেলকে (৪০) ছাত্রদলের একদল কর্মী মারধর করেন। এ ঘটনার পর বিকেলে শিবির কর্মী মো. রাশেদের ওপরও হামলা চালান ছাত্রদলের কর্মীরা। এর জেরে শিবিরের একদল কর্মী ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচিহাটা সর্দার দিঘির পাড় এলাকায় ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালান। এ সময় কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এ ঘটনায় ছাত্রদলের ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মাসুম পায়ে গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন।

আমানউল্যাহপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মাসুম প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরের দিকে একই এলাকার মো. সোহেলকে ইয়াবা সেবনকালে ছাত্রদলের কয়েকজন হাতেনাতে আটক করেন। এ সময় এলাকার মুরুব্বিরা তাঁকে হালকা মারধর করে তাঁর পরিবারের কাছে সোপর্দ করেন। তিনি বলেন, সোহেল একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। গত ৫ আগস্টের পর তিনি স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করেন। যার কারণে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা তাঁর পক্ষ হয়ে আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে অতর্কিত তিনিসহ ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালান।

উপজেলা জামায়াতের আমির আবু জাহের প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদলের কর্মীরা ৫ আগস্টের পর থেকে আমানউল্যাহপুরে তাঁদের অনেক নেতা–কর্মীকে মারধর করেছেন। আজ বিনা কারণে মারধর করা হয় জামায়াতের সমর্থক মো. সোহেলকে ও শিবির কর্মী মো. রাশেদকে (২৪)। হামলায় রাশেদ অচেতন হয়ে যান। তাঁদের কর্মীরা যখন রাশেদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত তখন তৃতীয় কোনো একটি পক্ষ ছাত্রদলের নেতা মাসুমের ওপর হামলা করে। তবে তারা শিবিরের কি না, তিনি এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি।

আমানউল্যাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি–সমর্থক চেয়ারম্যান বাহারুল আলম ওরফে সুমন প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরের দিকে ছাত্রদলের কর্মীরা মো. সোহেল নামের এক মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীকে আটক করে তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে সোহেলের পক্ষ হয়ে সন্ধ্যায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন ও গুলি ছোড়েন। এতে ছাত্রদলের নেতা ইব্রাহিম মাসুম বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধসহ চার-পাঁচজন নেতা–কর্মী আহত হন। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসাও উদ্ধার করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, আমানউল্যাহপুর ইউনিয়নের কাঁচিহাটা বাজারে দুর্বৃত্তদের হামলায় ছাত্রদলের একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।