বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি

কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

সহিংসভাবে ব্যক্তি পর্যায়ে কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার উদ্দেশে এ আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক শূন্যতা পূরণে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীনের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৬ বছরে প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কিংবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে যাঁরা দায়িত্ব পালন করেছেন, সবকিছুর আগে তাঁদের দলীয় পরিচয় ও আনুগত্য বিবেচনা করা হয়েছে। কয়েকজন ব্যতিক্রম বাদে এসব ব্যক্তির প্রায় সবাই স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিলেন।

শিক্ষক নেটওয়ার্কের অভিযোগ, এসব দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজেদের চারপাশে অনুগত শিক্ষকদের নিয়ে একটি সুবিধাভোগী বলয় তৈরি করেছিলেন। তাই গণ-অভ্যুত্থানের পরপরই তাঁদের ব্যাপারে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আস্থা ও বিশ্বাসের সংকট তৈরি হয়েছে। তাঁদের পৃষ্ঠপোষক সরকারের পতনের পর দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান পদত্যাগ করেছেন বা শিক্ষার্থীদের চাপে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। এটা স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রেও সত্য।

এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রশাসনিক নেতৃত্বে ভয়াবহ শূন্যতা তৈরি হয়েছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, শূন্যতা পূরণে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত তৎপর না হওয়ায় কিছু অগ্রহণযোগ্য ও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। অন্যদিকে সুযোগসন্ধানীরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতেও অগ্রহণযোগ্য ঘটনা ঘটাচ্ছেন।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক মনে করে, শিক্ষার্থীদের জমে থাকা ক্ষোভ প্রকাশ বা অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে নিরসনের কোনো উপায় না থাকায় অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। যেসব দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও নিপীড়নের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক বা দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনা উচিত। নাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় চলমান পরিস্থিতি সামলানো আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শিক্ষক নেটওয়ার্কের দাবি, সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথাযথ ও গ্রহণযোগ্য উপায়ে প্রশাসনিক শূন্যতা পূরণে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্যদিকে আস্থাহীনতা ও অবিশ্বাস ঘোচাতে শিক্ষকদেরও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।