দল বেঁধে আড্ডা আর রাইডে চড়ে আনন্দে মেতেছে শিক্ষার্থীরা

সেলফি তুলছে তিন শিক্ষার্থী
ছবি: সৌরভ দাশ

পাহাড়ের কোল ঘেঁষে হ্রদ। গাছগাছালিতে ভরা প্রাঙ্গণ। হ্রদের পাড়ে বসে একমনে আড্ডা দিচ্ছিল মো. মেজবাহ উদ্দিন, মো. আরফাত হোসেন ও আতাউর রহমান। তারা এবার নগরের নতুনপাড়ায় অবস্থিত বিসিএসআইআর ল্যাবরেটরি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

এই তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আজ সোমবার সকালে দেখা হলো সবুজে মোড়ানো ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্কে। এখানে বসেছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। আজকের এই উৎসবের মধ্য দিয়ে সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় আবার শুরু হলো জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা। আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই ‘বিকাশ’। এতে সহযোগিতা করছে কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।

আড্ডায় মশগুল মো. মেজবাহ উদ্দিন, মো. আরফাত হোসেন ও আতাউর রহমান জানায়, এই আনন্দ আয়োজনে এসে তারা বেশ উচ্ছ্বসিত। অনুষ্ঠান শুরু আগেই তারা এসে হাজির হয়েছে। ফয়’স লেক ঘুরে ঘুরে দেখছে। সৌন্দর্য উপভোগ করছে। তারা বেশ খুশি।

ফয়’স লেকের ভেসে বেড়াচ্ছে অনেকে

এই তিন শিক্ষার্থীর মতো হাজার হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণে এখন মুখরিত ফয়’স লেক পার্ক প্রাঙ্গণ। অভিভাবকদের সমাগমেও প্রাণবন্ত পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের কেউ দল বেঁধে গান গাইছে, কেউ সেলফি তুলছে। আবার অনেকে লাইন ধরে রাইডে উঠছে। অভিভাবকদের নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী প্রথম আলো পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের বুথেও ঢুঁ মারছে।

উৎসব প্রাঙ্গণে প্রবেশপথের পাশের খোলা জায়গায় এক সারি বুথ। সেখানে আগে থেকে করা নিবন্ধনপত্রটি দেখিয়ে প্রবেশের কুপন নিয়ে ভেতরে ঢুকছিল শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকেরা অবশ্য কাউন্টার থেকেই টিকিট কেটে প্রবেশ করছিলেন।

নগরের আগ্রাবাদে অবস্থিত আল জাবের ইনস্টিটিউট থেকে এবার এসএসসি পাস করেছে সামিয়া রহমান, রিফাহা তুন জান্নাত মাসাবা ও তামিমা আক্তার। সামিয়া ভর্তি হয়েছে চট্টগ্রাম কলেজে। অন্যরা সরকারি কমার্স কলেজে। এই তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলো পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের বুথে। তারা কিশোর আলো ম্যাগাজিন উল্টেপাল্টে দেখছিল। তারা জানাল, কিশোর আলো ম্যাগাজিনের নিয়মিত পাঠক তারা। ম্যাগাজিনে প্রকাশিত গল্প ও উপন্যাসগুলো বেশ ভালো লাগে তাদের।

রাইডে চড়ে আনন্দে মেতেছে শিক্ষার্থীরা

চরকির বুথের সামনে কথা হয় শিক্ষার্থী অন্বেষা দাশ ও প্রিয়ন্তী সরকারের সঙ্গে। তারা বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ থেকে পাস করেছে। তারা বলল, চরকিতে আফরান নিশো ও তমা মির্জা অভিনীত ‘সুড়ঙ্গ’ চলচ্চিত্র দেখানো হচ্ছে। এই সিনেমা দেখার ইচ্ছা ছিল। সাবস্ক্রিপশন পেয়ে প্রথমেই তারা সুড়ঙ্গ দেখবে। এরপর ‘পেট কাটা ষ’ ও ‘ঊনলৌকিক’ দেখার ইচ্ছা তাদের।

ম্যাগাজিন বুথ থেকে বিজ্ঞানচিন্তা কিনে অভিভাবক মোহাম্মদ সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কার, আবিষ্কারের পেছনের ইতিহাস ও গল্প উঠে আসে বিজ্ঞানচিন্তায়। এটি নিয়মিত পড়ে তাঁর মেয়ে।

রাউজানের বাসিন্দা মো. আজাদুল ইসলাম এসেছেন তিন শিক্ষার্থীকে নিয়ে। তারা সবাই একই বিদ্যালয় থেকে পাস করেছে। এর মধ্যে একজন আজাদুলের মেয়ে। আজাদুল বলেন, প্রথম আলো দারুণ এক আয়োজন করেছে। শিক্ষার্থীরা সত্যিকার অর্থেই উৎসবে মেতে উঠেছে।

রাইডে চড়ছিল শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন, আবদুল রাজাক। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তারা বলে, বন্ধুরা মিলে অনেক মজা করছে। তবে অপেক্ষা করছে আফরান নিশো ও মেহজাবীনকে দেখার জন্য। এ ছাড়া বে অব বেঙ্গলের গানের তালে নাচার জন্যও প্রস্তুত তারা।