তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ছাঁটাই, বরখাস্ত, গ্রেড কারচুপি, টার্গেটের নামে ফাউ খাটানোসহ সব ধরনের হয়রানি, নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতারা। পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিও জানানো হয়।
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় শ্রমিক সমাবেশে ইউনিয়নের নেতারা এসব দাবি জানান। সমাবেশে কারাবন্দী শ্রমিক ও নেতাদের মুক্তি, আন্দোলনে নিহত চার শ্রমিকের আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানানো হয়।
ইউনিয়নের সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, শ্রমিকদের দাবি ও বর্তমান বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী মজুরি বাড়ানো হয়নি। যৎসামান্য যেটুকু মজুরি বাড়ানো হয়েছে, সেখান থেকেও নানা অপকৌশলে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। শ্রমিকেরা অভিযোগ করেছেন, তাদের আগের গ্রেড থেকে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। শ্রম আইন লঙ্ঘন করে আন্দোলনে অংশ নেওয়া কমিটির নির্বাচিত সদস্যদের বরখাস্ত করা হয়েছে।
নতুন মজুরি কাঠামো থেকে বঞ্চিত করতে ছাঁটাই, বরখাস্তের শিকার শ্রমিকদের নামে মিথ্যা তারিখ দিয়ে নোটিশ জারি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। মন্টু ঘোষ বলেন, এসব অত্যাচার দ্রুত বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি কারখানাভিত্তিক রেশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
উপদেষ্টা আবদুল্লাহ ক্বাফী বলেন, দেশের ৯৫ ভাগ শ্রমিক, মেহনতি মানুষ লুটপাট ও অর্থ পাচারের নির্মম পরিণতি ভোগ করছে। মন্ত্রণালয়ের নাম শ্রম মন্ত্রণালয় হলেও, প্রকৃত অর্থে তা মালিক মন্ত্রণালয়ে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করাই মুক্তির পথ।
সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান বলেন, একদিকে মজুরি বোর্ড খুবই অপর্যাপ্ত মজুরি নির্ধারণ করেছে, অন্যদিকে মালিকপক্ষ নানাভাবে শ্রমিকদের হয়রানি ও নির্যাতন করছে। অবিলম্বে এই অবস্থার প্রতিকার না করা হলে শ্রমিকেরা কঠোর অবস্থান গ্রহণে বাধ্য হবে।
সহসভাপতি জলি তালুকদার বলেন, শ্রম আইনের ধারা ২০৫(১০) ও ধারা ১৯৫ লঙ্ঘন করে টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরীতে গত ডিসেম্বরে প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের আন্দোলনে অংশ নেওয়া কমিটির দুজন নির্বাচিত সদস্যকে বে-আইনিভাবে বরখাস্ত করা হয়। এ বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণ করেও শ্রম মন্ত্রণালয়ের দুই অধিদপ্তর এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা দুলাল সাহা, আবদুস সালাম বাবুল, বাবুল হোসেন, মাসুদ রানা প্রমুখ। সমাবেশে শেষে মিছিল হয়। মিছিলটি প্রেসক্লাব সংলগ্ন কদম ফোয়ারা, তোপখানা রোড, পল্টন মোড় হয়ে মুক্তি ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।