অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের এক মামলায় চার বছরের জন্য দণ্ডিত ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদের জামিনের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট।
জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ওই মামলায় চার বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণের পর হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন এম হারুন-অর-রশীদ। এর শুনানিতে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের পর গত বছরের ৩০ আগস্ট হাইকোর্টের একই বেঞ্চ তাঁকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। একই সঙ্গে আদালত আপিল শুনানির জন্য আপিলকারীপক্ষকে পেপারবুক প্রস্তুত করতে সময় বেঁধে দেন।
এদিকে হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আপিল বিভাগে আবেদন করে। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ দেন। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকে। এরপর হারুন-অর-রশীদ জামিনে মুক্তি পান।
ছয় মাসের জামিনের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করেন হারুন; যা আজ হাইকোর্টে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে তাঁর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. শাহীন আলী ও আল মামুন সারোয়ার। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে ছিলেন।
পরে আইনজীবী মো. শাহীন আলী প্রথম আলোকে বলেন, এম হারুন-অর-রশীদের জামিনের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে তাঁর করা আপিল শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন আদালত। ইতিমধ্যে আপিলকারীর পক্ষে সারসংক্ষেপ জমা দেওয়া হয়েছে। এখন আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা ওই মামলায় ২০২২ সালের ১২ মে রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪। রায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন ও কোম্পানির প্রেসিডেন্ট হারুন-অর-রশীদসহ ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। চার বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে হারুন হাইকোর্টে আপিল করার পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
হারুনের করা আপিল গত বছরের ৯ জুন হাইকোর্ট শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। তবে জামিন চেয়ে তাঁর করা আবেদন নাকচ করেন। এরপর চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন হারুন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২৯ জুন হাইকোর্ট তাঁর চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। প্রতিবেদন আদালতে জমা পড়ে। এরপর জামিন চেয়ে আবেদন করেন হারুন।