দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুজন সংসদ সদস্য। তাঁরা হলেন জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পংকজ নাথ।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪’ পাসের আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে। সিন্ডিকেট ভাঙা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার মতো ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আছে কিনা, সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
এই সংসদ সদস্য বলেন, বিভিন্ন সময় বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা যখন যান, তখন বাজার ঠিক থাকে। কিন্তু তাঁরা চলে যাওয়ার পর বাজার আবার আগের অবস্থায় চলে যায়। পণ্যের দাম দ্বিগুণ বাড়ে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘এই আইন (বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সংশোধনী) না এনে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো আইন নিয়ে আসতেন, সিন্ডিকেট ভাঙার মতো কোনো আইন নিয়ে আসতেন, তাহলে মনে করতাম যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভালো কোনো কাজ করছে।’
জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব, বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন। মানুষের যে হাহাকার অবস্থা, আওয়ামী লীগের এত উন্নয়ন ও অর্জনের পরও বাজার নিয়ন্ত্রণ না করায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পংকজ নাথ বলেন, বিলটিতে জনগণের স্বার্থ নেই। এখানে শুধু শব্দের পরিবর্তন হচ্ছে। ট্যারিফ কমিশনের দায়িত্ব হলো ভোগ্যপণ্য ও নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ, বাজারে সহজলভ্যতা, আমদানি ও উৎপাদন সমন্বয় করে মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়া। সিন্ডিকেট ভেঙে গরিব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করা। সে ক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া ট্যারিফ কমিশনের কাজ। এগুলো থাকলে জনস্বার্থ থাকত।
শুধু শব্দগত পরিবর্তনের জন্য বিল আনার সমালোচনা করে পংকজ নাথ বলেন, সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পয়সা খরচ না করে একটি প্রশাসনিক আদেশে এটি বলে দিলেই হতো। তিনি বলেন, ‘সচিবের পদ থেকে কর্মকর্তা—এ শব্দের পরিবর্তন করার জন্য সংসদের ৩৫০ এমপিকে ডেকে এনে, প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে আপনি…শব্দ পরিবর্তন করে…অর্থের অপচয়।’
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম পরিবর্তন করতে ওই সংশোধনী আনা হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম হবে ‘পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ)’। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।