চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থীর ওপর মুখোশধারীদের হামলা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ওপর মুখোশধারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের পরিবহন দপ্তরের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মুখোশধারী ৮ থেকে ১০ জন এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী।

হামলার শিকার ওই দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত। তাঁরা প্রতিবেদককে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন। তাঁরা জানান, হামলাকারীরা তাঁদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে, দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। এ ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত।

ভুক্তভোগী ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাতে বিভাগের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই দুই শিক্ষার্থী সেখান থেকে ফিরছিলেন। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ থেকে পরিবহন দপ্তরের সামনে আসতেই একদল মুখোশধারী তাঁদের ওপর আক্রমণ করে। দুই শিক্ষার্থীর একজনকে তুলে তারা পরিবহন দপ্তরের সামনের ঝুপড়িতে, আরেকজনকে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে দুজনকে মারধর করা হয়। পরে একটি মোটরসাইকেল আসতে দেখে হামলাকারীরা তাঁদের ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।

এ ঘটনা জানাজানি হলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা দপ্তরে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁদের অভিযোগ, অন্তত ৫০ বার কল করা হলেও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা কল রিসিভ করেননি। জানতে চাইলে ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। হামলাকারীদের তাঁদের কাছে শিক্ষার্থীই মনে হয়েছে, বাইরের কেউ নয়। হামলাকারীদের হাতে হাতুড়িসহ ধারালো অস্ত্র ছিল।’ তাঁরা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিরাপত্তা প্রহরী পুরো ঘটনা দেখলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে তাঁদের অনেক সহপাঠী ফোন দিয়ে সাড়া পাননি। তাঁরা এ ঘটনায় আতঙ্কিত। এর সুষ্ঠু বিচার চান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রক্টরিয়াল বডির একজন সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। আগামী রোববার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ আগস্টের পর থেকে মুখোশধারীদের হামলার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও অন্তত ছয়বার এমন চোরাগোপ্তা হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গত ৮ নভেম্বর পরিবহন দপ্তরের সামনে থেকে এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মারধর করে মুখোশধারীরা।