নতুন জামা পেয়ে খুশিতে এক লাফ দিল ছোট্ট সাইমুম (১০)। জামার ভাঁজ খুলতে খুলতে সে উচ্ছ্বাসমাখা কণ্ঠে বলে, ঈদের দিন নতুন জামা পরে সে সৈকতে ঘোড়ার পিঠে চড়বে। এই বলে ঘোড়ায় চড়ার একটু ভঙ্গি করেও দেখায় সে।
সাইমুম কক্সবাজারের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলের শুঁটকি মহালে থাকে। দেশের সবচেয়ে বড় এই শুঁটকিপল্লিতে তার মতো হাজারো সুবিধাবঞ্চিত শিশু রয়েছে। সাইমুমের মতো এই শুঁটকিপল্লির ১০০ শিশুকে এবার ঈদের পোশাক দিয়ে উৎসবের আনন্দে শামিল করলেন প্রথম আলো কক্সবাজার বন্ধুসভার সদস্যরা।
গত শনিবার দুপুরে পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়ার স্বপ্নজাল বিদ্যালয়ে শিশুদের হাতে নতুন জামা তুলে দেন পৌরসভার কাউন্সিলর এস এম আকতার কামাল ও প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুল কুদ্দুস। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রথম আলো বন্ধুসভা প্রতিবছর দেশজুড়ে ‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচি পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের এ উপহার দেওয়া হয়।
সাইমুমের মা সাবেকুন্নাহার এ ঘটনায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, তাঁর তিন সন্তানের মধ্যে সাইমুম সবার ছোট। বন্ধুসভার নতুন জামা না পেলে তার ঈদের আনন্দ মাটি হতো। সাবেকুন্নাহারের বাড়ি ছিল সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়ায়। ঘূর্ণিঝড়ে বসতবাড়ি সমুদ্রে বিলীন হলে পরিবারের সবাই মিলে এখানে ঠাঁই নেন।
নতুন জামা পেয়ে সাইমুমের মতো নয়নমণিও মহাখুশি। সে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। নতুন জামা বুকে জড়িয়ে হাসতে হাসতে নয়নমণি বলে, ঈদের দিন নতুন জামা পরে সে সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যাবে। নয়নমণির মা বেবী আকতার বলেন, গত ঈদেও তিনি মেয়েকে জামা কিনে দিতে পারেননি। তাঁর স্বামী কাউসার পেশায় জেলে। ঘূর্ণিঝড়ে বসতবাড়ি হারিয়ে এক যুগ আগে তাঁরা মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে এখানে এসে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন।
বন্ধুসভার কক্সবাজার জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন ম্যাজিক বোর্ড স্কুলের পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা জিমরান মোহাম্মদ, কক্সবাজার জেলা বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার, কক্সবাজার সিটি কলেজ বন্ধুসভার সভাপতি মোহাম্মদ আসিফ, সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি শফিকুল মোস্তফা প্রমুখ।