ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় ছাত্রলীগের হামলা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারামারির পর ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের নামে দুটি মামলা করেছেন ছাত্রলীগের দুই নেতা।
দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ শনিবার সকালে ছাত্র অধিকার পরিষদের আটক নেতা-কর্মীদের আদালতে পাঠিয়েছে শাহবাগ থানা-পুলিশ। এ কারণে ওই নেতা-কর্মীদের থানায় আটকে রাখার প্রতিবাদে পল্টন থেকে শাহবাগ থানা অভিমুখে গণ অধিকার পরিষদের ডাকা স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি পল্টন থেকে পুরান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের দিকে যাচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’–এর ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেখানে ছাত্রলীগ হামলা করে তাদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। হামলায় পরিষদের অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে গিয়েও তাঁদের পেটায় ছাত্রলীগ। বিকেলে মেডিকেল থেকে পরিষদের অন্তত ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করে শাহবাগ থানা-পুলিশ।
শাহবাগ থানার একজন উপপরিদর্শক আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারামারির ঘটনায় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন ও আমিনুর রহমান ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৫ নেতা-কর্মী ও অজ্ঞাতনামা ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় দুটি পৃথক মামলা করেছেন। মামলা নম্বর ১৪ ও ১৫ (৭ অক্টোবর)।
আসামিদের মধ্যে একজনকে ‘পলাতক’ দেখানো হয়েছে, বাকি ২৪ জনকে আজ সকাল ৯টা ২০ মিনিটে সিএমএম আদালতে পাঠানো হয়েছে। দুটি মামলার আসামি একই।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও সাড়া দেননি শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা অঞ্চলের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে শাহবাগ থানার আওতাধীন এলাকায় হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। রাজু ভাস্কর্যের সামনে একজনের মাথায় আঘাত করে জখমের ঘটনায় একজন মামলা করেছেন। অন্যজন মামলা করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে তাঁকে ঘুষি দিয়ে দাঁত ভেঙে ফেলার অভিযোগে।
এদিকে শাহবাগ থানা থেকে নেতা-কর্মীদের আদালতে পাঠানোর কারণে পূর্বঘোষিত স্বেচ্ছায় কারাবরণের মিছিল শাহবাগের পরিবর্তে আদালতের দিকে যাচ্ছে বলে প্রথম আলোকে জানান গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক।
গণ অধিকার পরিষদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ জানান, ছাত্র অধিকার পরিষদের ২২ নেতা-কর্মী ও গণ অধিকার পরিষদের ১ জন পুলিশের হাতে আটক রয়েছেন। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় নেতা তারেকুল ইসলাম, নাজমুল হাসান, এইচ এম রুবেল, মো. সানাউল্লাহ, তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, মামুনুর রশীদ মামুন, পারভেজ মাহমুদ ও তসলিম হোসাইন অভি; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা আখতার হোসেন, আকরাম হুসাইন, আসিফ মাহমুদ, জাহিদ আহসান ও সাদ্দাম হোসেন; ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার নেতা আসাদ বিন রনি, মুজাহিদ মিজান, জিহাদ পাটওয়ারি, মো. রাকিব ও আরিফুর রহমান আরিফ; ঢাকা কলেজ শাখার নেতা ইউসুফ হোসাইন ও মো. রাকিব; কুমিল্লা মহানগরের নেতা মো. ওয়ালিউল্লাহ; শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজের নেতা আবু মো. কাওসার এবং গণ অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা বিল্লাল হোসেন।