ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির গাড়িতে হামলা করেছেন একদল যুবক। হামলায় গাড়ি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গোলাম মাওলা রনি অক্ষত আছেন। তিনি বলেছেন, হামলাকারীরা পেশাদার সন্ত্রাসী বলে তাঁর মনে হয়েছে।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন গোলাম মাওলা রনি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করে তিনি পরাজিত হন। কয়েক বছর ধরে টেলিভিশন টক শোতে অনেকটা নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠা গোলাম মাওলা রনি বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করে আসছেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁর গাড়িতে হামলা হয় বলে জানিয়েছেন গোলাম মাওলা রনি। ঘটনার বিস্তারিত তুলে তিনি প্রথম আলোক বলেন, টিএসসির সামনে দিয়ে তোপখানা রোডে নিজের অফিসের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। তাঁর গাড়ি যখন মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পার হয়, তখন পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের উল্টো পাশে ইউটার্নের ওখানে পাঁচ–ছয়জন যুবক হাতুড়ি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে ফেলেন তাঁরা। এতে হতচকিত হয়ে চালক প্রথমে গাড়ি ব্রেক করেন। তারপর আবার দ্রুত টান মেরে ওই জল্লাদদের কবল থেকে বাঁচার চেষ্টা করেন। হাতুড়ি বাহিনী পেছনে ছোটে আর অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে থাকে। চালক দ্রুত গাড়ি চালিয়ে ওই জায়গা ত্যাগ করেন। গাড়ির ভেতরে থাকায় আমরা কেউ আহত হইনি।’
পরে বিষয়টি ফোনে পুলিশকে জানিয়েছেন উল্লেখ করে গোলাম মাওলা রনি বলেন, এ ছাড়া ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি সান্ত্বনা দেন।
চার-পাঁচজন ব্যক্তি হামলায় অংশ নিয়েছিলেন জানিয়ে গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘এত অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনাটা ঘটেছে যে কাউকে চেনা যায়নি। গাড়ির সামনের অংশটা যে ভেঙেছে, তাকে দেখলে হয়তো চিনতে পারব। আমার চালকের ভাষ্য, আরও যে তিন-চারজন দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁদের বয়স প্রায় ৪০ বছর, চোখ লাল। তাঁদের পেশাদার (সন্ত্রাসী) মনে হয়েছে। পুরো কাজটা যেভাবে করা হয়েছে, তাতে মনে হয়েছে যে তাঁরা আমাকে অনেকক্ষণ ধরে অনুসরণ করছিলেন। আমার গাড়িটি প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেগে চলছিল। এই গাড়িকে সামনে থেকে এসে যেভাবে আঘাত করা হয়েছে, তা পেশাদার না হলে সম্ভব নয়।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, ‘আমি আমার মতো করে টক শোতে কথা বলি। এমন ঘটনা ঘটার হলে এক বছর-পাঁচ বছর আগেও ঘটতে পারত। কেউ সরকারকে বিব্রত করার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে, আবার সরকারের মধ্যে বিভিন্ন কাউন্টার গ্রুপ, তারাও ঘটিয়ে থাকতে পারে। আমাকে ভয় দেখানোর কী আছে? ভয় দেখালে যে কাজ হয় না, তা তো সবাই জানেন’
পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাজিরুর রহমান জানিয়েছেন।