র‌্যাব কিছু ‘উল্টাপাল্টা’ কাজ করেছে, অস্বীকারের সুযোগ নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
ফাইল ছবি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, র‌্যাব আগে কিছু ‘উল্টাপাল্টা’ যে করেছে, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে র‌্যাবের জবাবদিহি নিশ্চিতের ক্ষেত্রে এখন অনেক উন্নতি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সফরে র‌্যাবের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল মোমেন এ মন্তব্য করেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছিলেন ডোনাল্ড লু।

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘র‌্যাবের ওপরে নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। র‌্যাবও তো কিছু উল্টাপাল্টা কাজ করেছে। এই বাস্তবতা অস্বীকার করতে পারবেন না তো। এখন অনেক ম্যাচিউরড (র‌্যাব)। আগে প্রথম দিকে র‌্যাব অনেক লোকজনকে খামোখা কী করে ফেলেছে, কিন্তু বিষয়গুলো পরিবর্তন হয়েছে। র‌্যাব জবাবদিহির ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করেছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, বিএনপির শাসনকালে ২০০৪ সালে র‌্যাব গঠনের শুরুর দিকে এ ধরনের অভিযোগ বেশি ছিল। র‌্যাবের জবাবদিহির ক্ষেত্রে উন্নতির উল্লেখ করে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় তিন শ কর্মকর্তার পদাবনতি বা চাকরিচ্যুতির প্রসঙ্গ টানেন।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‌্যাবসহ এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি ও শক্তিশালী করতে ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরে এসেছিলেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ডোনাল্ড লু এসেছেন আমাদের সম্পর্কের উন্নতিতে সহযোগিতা করার জন্য। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে।’ আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আর আমরাও বলেছি যে আমাদের কিছু কিছু দুর্বলতা আছে। উনিও স্বীকার করেছেন যে আমেরিকাতেও তাদের অনেক দুর্বলতা আছে, এটা পারফেক্ট নয়। সুতরাং আমরা একই রকম অবস্থানে।’

লুর সঙ্গে খুব ভালো, ইতিবাচক ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন চাচ্ছেন, আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা যেন অত্যন্ত উন্নত হয়। আর আমরা বড় ইকোনমি হয়ে যাচ্ছি, ৩৫ নম্বর ইকোনমি। সুতরাং তারা চায় আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে এবং আমেরিকার মূল্যবোধ, নীতি আমাদের সঙ্গে তো এক…তারা গণতন্ত্র চায়, আমরাও চাই, আমরা গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছি। তারা মানবাধিকার চায়, আমরাও চাই। কিছু কিছু ব্যত্যয় ঘটে…তোমাদের যদি কোনো সমস্যা থাকে, শুধু আমাদের জানাও।’

গত রোববার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু

গত রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে ডোনাল্ড লু বৈঠক করেছিলেন। বৈঠক শেষে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, র‍্যাবের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ভূমিকায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ, তিনি অর্থনৈতিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। আমরা অর্থনৈতিক মুক্তি চাই, এখানে তিনি খুব ভালো ভূমিকা রাখতে পারেন।’

বাংলাদেশের যেসব দুর্বলতা আছে, সেগুলো দূর করার চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে জানিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের একটি সমস্যা আছে, শ্রম ইউনিয়ন নিয়ে। আমাদের ওটাতে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বেতন, সুযোগ–সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আইনে কিছু গ্যাপ আছে, আমরা সেটা মেটানোর চেষ্টা করছি।’