‘উনি কি ইন্তেকাল করেছেন’—এমন বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা, পদত্যাগ ও ৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। এ জন্য সিইসিকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। তা না হলে দেশের প্রচলিত আইনে উপযুক্ত আদালতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে।
ফয়জুল করিমের পক্ষে আজ বৃহস্পতিবার আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল বাসেত রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ওই আইনি নোটিশ পাঠান। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নোটিশের ভাষ্য, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিম ও দলের কিছু নেতা-কর্মী ১২ জুন হামলার শিকার হন। ঘটনাটি ইলেকট্রনিক এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনকালীন প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই নির্বাচন কমিশনের অধীন।
সিইসির উদ্দেশে নোটিশে বলা হয়, অথচ আপনি নোটিশ গ্রহীতা (সিইসি) ঘটনার বিষয়ে কোনো ধরনের ব্যবস্থা এখনো গ্রহণ করেননি। এ ব্যর্থতার জন্য আপনি-ই দায়ী। সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপনি আপনার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।
ভোট গ্রহণ শেষে ১২ জুন সিইসির দেওয়া বক্তব্য উদ্ধৃত করে নোটিশে বলা হয়, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাতপাখার মেয়ার প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা ও রক্তাক্ত করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন যে এটি আপেক্ষিক। রক্তাক্ত সবকিছু আপেক্ষিক, উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? আমরা দেখছি-না? উনি কতটা রক্তাক্ত হয়েছেন। উনার রক্তক্ষরণটা দেখিনি। যতটা শুনেছি, ওনাকে কেউ পেছন দিক থেকে ঘুষি মেরেছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বাংলাদেশের কেবল ঐতিহ্যবাহী সৈয়দ পরিবারের সন্তানই নন; তিনি একজন ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক, রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির হিসেবে দেশ ও বিদেশে তাঁর লাখ লাখ ভক্ত ও অনুসারী রয়েছেন। ভোট কারচুপিতে বাধা দেওয়ার কারণে তাঁর ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আপনার (সিইসি) ওই বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন, অযাচিত, কুরুচিপূর্ণ, অমানবিক, বেআইনি ও অনৈতিক। যার ফলে ফয়জুল করিমের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এর জন্য আপনি (সিইসি) দায়ী। তা ছাড়া তার মর্যাদা ও সুনামের অবর্ণনীয় ক্ষতি হয়েছে। তাঁর আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ শ কোটি টাকা।’
এ অবস্থায় নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে সিইসিকে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে এবং এই সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ শ কোটি টাকা প্রদান করে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার’ পদ থেকেও পদত্যাগ করতে নোটিশের শেষাংশে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যথায় সিইসির বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে উপযুক্ত আদালতে প্রয়োজনীয় সব আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ রয়েছে।