২০২২ সালের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশ ও র্যাবের ১১৭ সদস্য বিপিএম ও পিপিএম পদক পেয়েছেন।
পুলিশ সপ্তাহকে দৃষ্টিনন্দন করার লক্ষ্যে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের প্যারেড মাঠসংলগ্ন পুকুরের চারপাশে দৃষ্টিনন্দন বাতি, ওয়াকওয়ে, সিসি ব্লক ও ল্যান্ডস্কেপিং প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এই কাজ সার্বক্ষণিক তদারকি করে সফলভাবে সম্পন্ন করায় এবার ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম-সেবা)’ পেয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান।
পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩-এ পদকের জন্য এই কর্মকর্তা নির্বাচিত হওয়ার কারণ হিসাবে এ–সংক্রান্ত প্রকাশনায় এ কথা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া মিরপুরের পুলিশ স্টাফ কলেজ চত্বরে স্মৃতিস্তম্ভ প্রকল্পের একটি পুকুর ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে পানিশূন্য করে খরচ সাশ্রয়, প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা ও ১৯৯২-২০২১ পর্যন্ত কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের ডেটা সংরক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করায়ও ভূমিকা রেখেছেন
বলেও উল্লেখ করা হয়। সার্ভিস ডেস্ক নির্মাণেও তাঁর ভূমিকা রয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ পেয়েছেন বিপিএম-সেবা পদক (বাংলাদেশ পুলিশ পদক)। তাঁর কৃতিত্ব হিসেবে ‘সিএমপি ইনটেল’ নামে একটি চতুর্মাত্রিক নামক অফলাইন সফটওয়্যার ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে উপাত্তসমূহ বিশ্লেষণ করে কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছেন কি না, স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা সঞ্চিত রাখা যাচ্ছে।
ডিএমপির বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক জুবায়ের আহমেদ খান সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শীর্ষক গ্রন্থের ৮, ৯, ১০ ও ১১ নম্বর ভলিউমের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে বিপিএম-সেবা পদ দেওয়া হয়।
২০২২ সালে অসমসাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা এবং শৃঙ্খলামূলক আচরণের জন্য পুলিশ ও র্যাবের ১১৭ জন সদস্যকে বিপিএম, পিপিএম, বিপিএম-সেবা ও পিপিএম-সেবা পদক দেওয়া হয়। তাঁদের গতকাল মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনসমূহের ইতিবৃত্ত নামক বইয়ের সংকলন এবং ২০০১-২০২০ সাল পর্যন্ত দায়ের করা জঙ্গি-সংক্রান্ত ১ হাজার ৯৪৫টি মামলার হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করে ডেটাবেজ তৈরি এবং ‘জঙ্গিদের সঙ্গে জড়িত প্রোফাইল বিশ্লেষণ’ নামক প্রতিবেদন সম্পাদনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করায় পিপিএম পদক দেওয়া হয়েছে অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাসমিন আক্তারকে। এ ছাড়া তিনি ছয়জন পলাতক জঙ্গিকে গ্রেপ্তারে নেতৃত্ব দেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে পিপিএম পদক দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, গত বছর নিউমার্কেটে দুই দোকান কর্মচারীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। তখন ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে হারুন অর রশিদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শটগান দিয়ে ২১১ রাউন্ড গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এবার প্রথমে ১১৫ জনকে পদকের জন্য মনোনীত করা হয়। পরে জঙ্গিবিরোধী অনুসন্ধান ও অভিযানে সাহসিকতা ও কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আরও দুজনকে বিপিএম পদকের জন্য মনোনীত করে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাঁরা হলেন র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও একই শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন।