তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা পৃথক আবেদন আপিল বিভাগে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ রোববার এই দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর করে ওই রায় দেওয়া হয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত সপ্তাহে একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে এর আগে অন্য আবেদনটি করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চার ব্যক্তি হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
মির্জা ফখরুলের আবেদনের পক্ষে আদালতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিকের আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে দুটি রিভিউ আবেদন একসঙ্গে শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দিন নির্ধারণ করেছেন চেম্বার আদালত।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ে বলা হয়, ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানসম্মত। এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে ২০১০ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।