খ্যাতিমান প্রাবন্ধিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাবিদ ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মাহবুবুল হক দীর্ঘদিন হৃদ্রোগ ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মরহুমের লাশ চট্টগ্রাম নগরের লালখানের নিজ বাসায় আনা হবে। আগামীকাল শুক্রবার বাদ আসর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাহবুবুল হকের মেয়ে উপমা মাহবুব। তিনি প্রথম বলেন, আগামীকাল সকাল ১০টায় শ্রদ্ধাঞ্জলির জন্য মরহুমের লাশ চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলায় আনা হবে। পরে সেখান থেকে নগরের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে নেওয়া হবে। বাদ জুমা সেখানে জানাজা হবে। পরে সেখান থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নেওয়া হবে।
মাহবুবুল হকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের, সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) বেনু কুমার দে ও সহ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) মো. সেকান্দর চৌধুরী। আজ বেলা দুইটার দিকে আলাদা তিন বিজ্ঞপ্তিতে তাঁরা এ শোক জানান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মাহবুবুল হক। শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রবন্ধ রচনা, ফোকলোর চর্চা, গবেষণা, অনুবাদ, অভিধান, সম্পাদনা ও পাঠ্যবই রচনার জন্য দেশে-বিদেশে তিনি পরিচিতি লাভ করেছেন।
১৯৪৮ সালের ৩ নভেম্বর তিনি ফরিদপুর জেলার মধুখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে শৈশব থেকে তিনি চট্টগ্রামেই ছিলেন। তিনি ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও একই বিভাগ থেকে ১৯৭০ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন। পরে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশ, ভারত ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে তাঁর লেখা ৪০টির বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৯ সালে ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক, ২০১৬ সালে রশিদ আল ফারুকী পদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সাহিত্য পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।