ডেমু ট্রেনের দেশি ও বিদেশি সরবরাহকারীদের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে হাজির করতে বলেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির আগামী বৈঠকে তাদের উপস্থিত করাতে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
আজ বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডেমু ট্রেন আমদানিতে সরকারের ৬৫৩ কোটি টাকা অপচয় হয়েছে উল্লেখ করে এর সঙ্গে কারা জড়িত এবং এই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে স্থায়ীভাবে কালোতালিকাভুক্ত করা যায় কি না, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলেছিল সংসদীয় কমিটি। বুধবারের বৈঠকে এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, একটি চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৩ সালে ৫৯৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ সেট ডেমু সংগ্রহ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বল্প দূরত্বে কমিউটার ট্রেন পরিচালনার বিবেচনায় ডেমু ট্রেন কেনা হলেও পরে রুটের দূরত্ব ১৪০ কিলোমিটারের বেশি নির্ধারিত হয়। কেনার পর গত ১১ বছরে ডেমুর কোনো ধরনের ভারী শিডিউল/জেনারেল ওভারহলিং সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। বিদ্যমান ওয়ার্কশপগুলোতে কারিগরি সুবিধা নেই। ফলে বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ডেমু সেটগুলো প্রায়ই মেরামতাধীন হয়, দীর্ঘ দূরত্বের কারণে ইঞ্জিনের লোড অনেক বেড়ে যায়। বৈদেশিক উৎস থেকে ডেমুর মালামাল সংগ্রহ করা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। ডেমু ট্রেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে স্থায়ীভাবে কালোতালিকাভুক্ত করতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা প্রয়োজন।
পরে ডেমু সরবাহকারীদের তলবের সিদ্ধান্ত নেয় সংসদীয় কমিটি। দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের কারণে কমিটি রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) পার্থ সরকারকে ‘বরখাস্ত’ করার সুপারিশ করে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। এ ছাড়া সহজ ডটকমের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় তাদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, শফিকুল ইসলাম, শামীম ওসমান, ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার, মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মো. শফিকুর রহমান ও নুরুন নাহার বেগম অংশ নেন।