প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল

মোটাদাগে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সহিংসতা খুব বেশি মনে করেন না সিইসি

মোটাদাগে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সহিংসতার খুব বেশি ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে খুব বেশি অভিযোগও নির্বাচন কমিশন পায়নি বলেন তিনি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা, ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, পোস্টার ছেঁড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বলেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সিইসি। এর আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

সরকারি দলের প্রত্যেক প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন, সহিংসতা হচ্ছে, ইসি কেন আচরণবিধি মানাতে পারছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এটা আমি স্বীকার করি না। নির্বাচনী মাঠে আমরা অনেক জায়গায় (এক্সটেনসিভলি) ঘুরে বেড়িয়েছি। আমরা প্রার্থীদের সঙ্গে সভা করেছি। প্রশাসনের সঙ্গে সভা করেছি। তাদের কাছ থেকে খুব বেশি অভিযোগ আমরা পাইনি।...কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে। কিন্তু মোটাদাগে খুব বেশি ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয় না। তবে সহিংসতা একেবারে  হয়নি সে কথা বলছি না।’

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, নির্বাচনে ভোটাররা আসবেন, এটি অবাধ হতে হবে। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে তাতে মৌলিক মানবাধিকার অবশ্যই বিঘ্নিত হবে। সেই লক্ষ্যে মানবাধিকার কমিশন ও ইসি যৌথভাবে কাজ করে যাওয়ার বিষয়ে সহমত পোষণ করেছে। তিনি বলেন, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মনে করেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা কম। রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা থাকা দরকার।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান গণমাধ্যমের ভূমিকার কথাও বলেছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘গণমাধ্যমের ভূমিকাটাও বস্তুনিষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন। অনেক সময় গণমাধ্যম ঠিক তার যে অংশটুকু প্রয়োজন ওইটুকু কেটে নিয়ে আগে এবং পিছে বাদ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এটাও সকল সময় না মাঝে মাঝে এটা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে।’

বৈঠক শেষে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোট দেওয়া এবং ভোটে অংশগ্রহণ করা একটি অধিকার। তেমনি ভোট না দেওয়া এবং ভোটে অংশগ্রহণ না করাও একটা অধিকার। তবে ভোটে বাধা দেওয়ার অধিকার কারও নেই। এটি আইনের বরখেলাপ, মানবাধিকার লঙ্ঘন। আবার কেউ যদি ভোট দিতে না চায়, তাকে বাধ্য করাও আচরণবিধির লঙ্ঘন।’

সাংবিধানিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ প্রত্যেকের একটি অধিকার বলেন কামাল উদ্দিন। সেই অধিকারটি যাতে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা যায় এবং দেশে জাতীয় একটি সুন্দর নির্বাচন সম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে আলোচনার জন্য তাঁরা এসেছিলেন বলে জানান।

কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের সময়ে অনেক সময় অনেক ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। বিশেষ করে যাঁরা সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সদস্য অথবা পঙ্গু বা অন্যান্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তাঁদের ক্ষেত্রে অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেগুলো যাতে না হয় এবং প্রত্যেক প্রার্থী ও ভোটাররা যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা তাঁরা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে যথাযথ ভূমিকা পালন করে, সে বিষয়টি ইসিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।