নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর সংসদ সদস্যপদ স্থগিত ও দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে আসন্ন সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর অন্যায় আচরণের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালী প্রেসক্লাবের রবিউল হাসান কচি মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শিহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খান, জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মহিউদ্দিন, আবদুর রহমান, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী বলেন, দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাঁকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে বলেছেন। পক্ষান্তরে মন্ত্রী ও এমপিদের আত্মীয়স্বজন যেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান, সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী দলের সভানেত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে তাঁর ছেলেকে সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করিয়েছেন। তিনি ছেলেকে প্রার্থী করিয়েছেন শুধু তাঁকে (খায়রুল আনম চৌধুরী) অপমান করানোর জন্য, হারানোর জন্য।
খায়রুল আনম চৌধুরী অভিযোগ করেন যে একরামুল করিম তাঁর ছেলেকে প্রার্থী করিয়েই ক্ষান্ত হননি, এরই মধ্যে তাঁর ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়নকাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেন। তাঁর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ১৩ এপ্রিল সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগ নেতা বশির আহমেদের (৬০) ওপর হামলা করিয়েছেন, যিনি এখনো হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ছাড়া একরামুলের সন্ত্রাসী বাহিনী ও তিনি নিজে সুবর্ণচরের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ফোন করে হুমকি দিচ্ছেন।
খায়রুল আনম চৌধুরী উল্লেখ করেন, ‘একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগের কোনো নীতিতে বিশ্বাস করেন না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাস করেন না। তাঁরা একরাম সাহেবের নীতিতে বিশ্বাস করেন। এই একরামুল করিম চৌধুরী অবৈধ টাকার জোরে নানা অনিয়ম করে যাচ্ছেন। তিনি মডেল মসজিদ নির্মাণেও কমিশন খেয়েছেন। এত বড় বড় অন্যায় করার পর এখন তিনি আমাদের বলেন চোর, উনি সাধু।’
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শিহাব উদ্দিন বলেন, সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী তাঁর ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করার হুমকি দিয়ে তাঁর শপথ ভঙ্গ করেছেন। তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।
দলীয় নেতাদের অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে তাঁর ফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি। তাই এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।