সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী
সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী

ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য নজিবুল বশরসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

সাড়ে তিন বছর আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গুলিতে এক মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে।

মামলায় বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম রশিদুল হক, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা, হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতাসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নিহত ছাত্র রফিকুল ইসলামের বাবা আবদুল জব্বার আজ শুক্রবার সকালে বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলাটি করেন। হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি দেড় শ জন।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন হাটহাজারী সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম ও শাহাদাত হোসেন, হাটহাজারী থানার সাবেক ওসি রফিকুল ইসলাম, পরিদর্শক রাজীব শর্মা, কেশব চক্রবর্তী, শফিকুল ইসলাম ও আমির হোসেন, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মুকিব হাসান, কবির হোসেন ও জসীমউদ্দীন।

ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদুল আলম ও ইউনুস গণি চৌধুরী, হাটহাজারী পৌরসভার সাবেক প্রশাসক মনজুরুল আলম চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাসির হায়দারকেও আসামি করা হয়েছে।

এ ছাড়া হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মইনুদ্দিন রুহি ও মাওলানা সলিমুল্লাহকে আসামি করা হয়েছে। তাঁরা হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির শাহ আহমেদ শফির ছেলে আনাস মাদানীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর আগমনের প্রতিবাদে সেদিন দুপুরে হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের করেছিলেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। সেখানে গুলিতে মাদ্রাসার চার শিক্ষার্থী নিহত হন। পরে হাটহাজারী থানা, ভূমি অফিস ও সরকারি ডাকবাংলোয় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা হয়। এসব মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলাগুলো এখনো তদন্তাধীন।

সাড়ে তিন বছর আগের ঘটনায় নিহত এক মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর বাবার করা আজকের মামলার এজাহারে বলা হয়, সেদিন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা মিছিল বের করলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে। গুলির ঘটনায় আসামিরা জড়িত।

হেফাজতে ইসলামের শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুফতি হারুন ইজহার প্রথম আলোকে বলেন, গুলিতে মাদ্রাসার চার শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তখন পুলিশ ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের চাপে কেউ মামলা করতে পারেনি। উল্টো হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এখন নিহত এক ছাত্রের বাবা মামলা করলেন।