র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) নিয়ে জার্মানভিত্তিক সম্প্রচার সংস্থা ডয়চে ভেলে যে ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রচার করেছে, সেটিকে হাসির খোরাক বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, র্যাব রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ব্যবহৃত হচ্ছে না। সংস্থাটি নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আজ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
একজন সাংবাদিক ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চান। এ সময় তিনি বলেন, র্যাব তৈরি হয়েছিল এমন এক সময়, যখন দেশে ব্যাপক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ছিল। সবার মনে আছে, এক দিনে ৬৪ জেলার ৬৩ জেলায় ৪৯৫টি বোমাবাজি হয়েছিল। জঙ্গিবাদের জন্য বাংলা ভাইয়ের জন্ম হয়েছিল। গাছে লটকে মানুষকে হত্যা করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে, বিচারকক্ষে বোমাবাজি হয়। একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত এক জায়গায় বেড়াতে গেছেন, সেখানে বোমাবাজি হয়। মানুষ মারা যায়। তা ছাড়া তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ওপরও হামলা হয়। দেশে বোমাবাজির সংস্কৃতি হয়। এগুলো সবাই শুনেছেন।’
আমেরিকা ও ইউরোপের পরামর্শে ২০০৪ সালে র্যাব গঠিত হয়েছিল উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, প্রথম দিকে র্যাব বাড়াবাড়ি করেছে। বর্তমান সময়ে তারা যথেষ্ট পরিপক্ব হয়েছে। র্যাব জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্র এদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সহযোগিতা করেছে। র্যাব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে না।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতা নেবে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতিসংঘের সহযোগিতা নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়ে সরকারের কোনো আপত্তি নেই।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি করেছে। শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তারা যথেষ্ট সক্ষমতা রাখে। সে জন্য অন্যদের কাছ থেকে সরকারের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের সঙ্গে বৈঠকে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা বিষয়েও আলোচনা হয়। সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের তথ্যমতে, ওই সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছেন এক শিশুকে ব্যবহার করার জন্য। তিনি শিশুকে নির্যাতন করেছেন। অপব্যবহার করেছেন।’
রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমরা আশাবাদী। মিয়ানমার সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাদের নিয়ে যাবে। তবে কবে, কখন, তা আমরা জানি না।’