সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে যাঁরা বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে দেশে ফেরার আবেদন করেছেন, তাঁদের সে সুযোগ দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলারবিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আবদুর রহমান আল ইউসুফের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান রিয়াদে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
আজ রোববার দূতাবাসের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সৌদিতে যেসব বাংলাদেশির বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়ার মামলা (হুরুব) রয়েছে, যাঁদের ইকামার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে এবং যাঁরা দেশে ফেরার আবেদন করেছেন, তাঁদের ছাড়পত্র পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। এ অভিবাসীদের বেশির ভাগই কর্মহীন ও বেকার অবস্থায় থাকেন। ফলে তাঁদের আর্থিক সংকটে পড়তে হয়। এই অভিবাসীদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ দেওয়ার জন্য সৌদি উপমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশি অনেক কর্মী বিভিন্ন অভিযোগে সৌদি আরবে কারারুদ্ধ রয়েছেন। তাঁরা তাঁদের পরিবারের উপার্জনকারী সদস্য। কারারুদ্ধ এসব অভিবাসীর পরিবার বাংলাদেশে অনেক কষ্টে রয়েছে। গুরুতর অপরাধে বন্দী নন এমন বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সৌদি আরবের রাজকীয় ক্ষমা বিবেচনা করতে সৌদি উপমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘উদার ও শ্রমবান্ধব শ্রমিকনীতি হওয়ার পর বিদেশি শ্রমিকদের জন্য সৌদি আরব একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এ জন্য আমরা সৌদি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সৌদি আরবে কাজ করার একটা প্রবণতা রয়েছে। ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সৌদি আরব দক্ষ জনশক্তিকে স্বাগত জানাবে। তাই বাংলাদেশে আমাদের শ্রমিকদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।’
এ সময় সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আলি বিন আবদুর রহমান আল ইউসুফ বাংলাদেশি শ্রমিকেরা কঠোর পরিশ্রমী বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তাঁরা সৌদি আরবের অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন বলে জানান। তিনি বাংলাদেশি শ্রমিকদের সমস্যাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং দ্রুত তা সমাধানের উদ্যোগ নেবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন।
বৈঠকে জাবেদ পাটোয়ারী বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসে কালচারাল অ্যাটাচে নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন, যেন বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও বেশি শিক্ষার্থী তাঁদের কাগজপত্র দ্রুত সত্যায়িত করে সৌদি আরবে যেতে পারেন। এ ছাড়া দক্ষ ও পেশাজীবী অভিবাসী, যাঁরা সৌদি আরবে যেতে ইচ্ছুক, তাঁরাও এ থেকে সুবিধা পাবেন বলে জানান তিনি।
বৈঠকে সৌদি আরবে ২৮ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।