সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য চেয়েছে চুক্তি পর্যালোচনা কমিটি

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দরপত্র ছাড়াই বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তিসংশ্লিষ্ট কাগজপত্র চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত চুক্তি পর্যালোচনা কমিটি। এসব চুক্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন ও অনিয়মের অভিযোগ আছে। এগুলো যাচাই–বাছাই করতে কাজ করছে কমিটি।

১২ অক্টোবর পর্যালোচনা কমিটির সভায় দেড় দশকে চুক্তি হওয়া সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির দুজন সদস্য প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা বলেন, দুই সপ্তাহ পর পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। তার আগেই এসব নথি ও কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। এতে দরপত্রের মাধ্যমে চুক্তি করা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও থাকবে।

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পর্যালোচনা কমিটির দ্বিতীয় সভায় সামিট, ইউনাইটেড, আদানিসহ ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনায় এসব তথ্য–উপাত্ত ও নথি কমিটিকে সরবরাহ করা হয়। এসব দেখে একটি ধারণা নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। এরপর সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

গত আওয়ামী লীগ সরকার দরপত্র ছাড়া চুক্তি করতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১) করেছিল। এই আইনের অধীনে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতে যাওয়া যাবে না। এ কারণে এটি দায়মুক্তি আইন হিসেবে পরিচিতি পায়। তবে এ আইনের বাইরেও বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যরা বলেন, চুক্তিগুলো যথাযথভাবে হয়েছে কি না, চুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে কি না, জাতীয় স্বার্থ বিনষ্ট হয়েছে কি না, এসব বিষয় যাচাই করে দেখছে কমিটি। এসব চুক্তির বিষয়ে এখন কী করা যেতে পারে, তার আইনগত দিক পর্যালোচনা করে সুপারিশ করবেন তাঁরা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের চুক্তি পর্যালোচনায় ৫ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের পর প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি ‘জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের নিমিত্তে’ গঠিত তদন্ত কমিশনেরও নেতৃত্বে আছেন। পর্যালোচনা কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও সহ-উপাচার্য আব্দুল হাসিব চৌধুরী; কেপিএমজি বাংলাদেশের সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) আলী আশফাক, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ও ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ফ্যাকাল্টি অব ল অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের অর্থনীতির অধ্যাপক মোশতাক হোসেন খান।