কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ সোনাহাট সেতু মেরামতের জন্য ২০ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ সময় সন্ধ্যা সাতটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে বাকি সময় যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম।
সওজের কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। এর অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১ হাজার ২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পর সেতুটি মেরামত করা হয়। নির্মাণকালে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০০ বছর। সে মতে অনেক আগেই সোনাহাট সেতুর মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।
সওজ সূত্রে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতুটির পাশে দুধকুমার নদের দক্ষিণে মোট ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ মিটার লম্বা পিসি গার্ডার সোনাহাট সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। এর মধ্যে পুরোনো সেতুটির পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় গতকাল সেতু দিয়ে ২০ দিন সকাল-সন্ধ্যা যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্থানীয় আবুল হোসেন বলেন, এই রেলসেতু দিয়ে পাথরবোঝাই ট্রাক যাওয়ার সময় সেতু কাঁপে। এ ছাড়া সরু সেতু দিয়ে যখন একটি ট্রাক যায়, তখন পাশ দিয়ে অন্য যানবাহন যাওয়ার জায়গা থাকে না। এতে সেতুর দুই প্রান্তে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক বলেন, সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সেতু মেরামতের কাজ করলে পণ্য পরিবহনে কোনো সমস্যা হবে না। এর আগেও অনেকবার এভাবে ১২ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে সংস্কারকাজ করা হয়েছিল। তবে দ্রুত কাজটি শেষ করতে পারলে ভালো।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সেতুর পাটাতনগুলো আগের থেকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতেই সংস্কারের জন্য প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের জন্য সেতুতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংস্কারকাজ শেষ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা খুলে দেওয়া হবে।