নিজের অধীন নারী সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে অশোভন আচরণ করে অসদাচরণ করেছেন এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এই অপরাধের দায়ে তাঁকে ‘তিরষ্কার’ সূচক লঘুদণ্ড দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
শাস্তি পাওয়া ইউএনও অমিত চক্রবর্তী বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলার চররাজিবপুরে ইউএনওর দায়িত্বে আছেন। তবে তিনি এই অপরাধ করেছিলেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ইউএনও থাকার সময়। বিভাগীয় মামলার পর তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সম্প্রতি এই কর্মকর্তাকে লঘুদণ্ড দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অমিত চক্রবর্তী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ইউএনও থাকাকালে তাঁর অধীন কর্মরত একজন নারী সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। অভিযোগ ওঠে, তিনি ওই নারী কর্মকর্তার সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশোভন কথোপকথন, তাঁর স্বামী যেন বদলি হয়ে নীলফামারী জেলায় না আসেন সে বিষয়ে চাপ প্রয়োগসহ তাঁর বাচ্চা যেন রংপুরে থাকে এবং তিনি কর্ম এলাকায় (স্টেশনে) থেকে যেন চাকরি করেন—এসব বিষয়েও চাপ প্রয়োগ করেন। এ ছাড়া অভিযোগ ওঠে তিনি ওই নারী সহকর্মীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁকে বডি স্প্রে কিনে দেওয়া, রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলা, ফোন দিয়ে ভারসাম্যহীন ও অসংগতিপূর্ণ কথা বলা, রাত ৮টা থেকে ৯টার সময় অফিসে কোনো কাজ না থাকলেও অফিসে বসিয়ে রাখা, মাস্ক পরে তাঁর সামনে বসতে নিষেধ করা, বন্ধের দিনে ফোন ওয়েটিংয়ে থাকা নিয়ে চাপ প্রয়োগ করার মতো শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করেন। একজন নারী সহকর্মীর সঙ্গে খুবই অশোভন আচরণ করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে কৈফিয়ত তলব করা হয়। একই সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চান কি না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়।
পরে এ বিষয়ে তদন্তও করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তদন্ত কর্মকর্তা দাখিল করা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, অভিযোগগুলোর মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশোভনীয় কথোপকথন বা চ্যাটিং করা এবং ওই নারী কর্মকর্তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁকে বডি স্প্রে কিনে দেওয়ার মাধ্যমে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ সংঘটনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এসব কার্যকলাপ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ‘অসদাচরণের পর্যায়ভুক্ত’ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ জন্য অভিযোগের মাত্রা ও প্রাসঙ্গিক সব বিষয় বিবেচনায় অমিত চক্রবর্তীকে ‘তিরস্কার’ সূচক লঘুদণ্ড দেওয়া হলো।