স্ত্রী খুনে এসপি বাবুল সোর্স মুসাকে এক লাখ টাকা দেন

বাবুল আক্তার, মাহমুদা খানম
বাবুল আক্তার, মাহমুদা খানম

সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার তাঁর স্ত্রী মাহমুদা খানম খুনে জড়িত সোর্স (তথ্যদাতা) কামরুল শিকদার ওরফে মুসাকে এক লাখ টাকা পাঠিয়েছিলেন। বুধবার তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এ কথা বলেন কামরুলের আত্মীয় কাজী আল মামুন। তিনি কামরুলের স্ত্রীর বড় বোনের ছেলে। লোহাগাড়ার নড়াইলের বাসিন্দা তিনি। একটি কোচিং সেন্টারের পাশাপাশি জাতীয় দৈনিকের স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন আল মামুন।

এদিকে বাবুলের স্ত্রী খুন হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ আছেন কামরুল শিকদার। যদিও তাঁর স্ত্রী পান্না আক্তার দাবি করে আসছেন, তাঁর স্বামীকে ঘটনার পর চট্টগ্রামের বন্দর এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ তা শুরু থেকে অস্বীকার করে আসছে। কামরুলের নিখোঁজ রহস্য এখনো উদ্‌ঘাটিত হয়নি।

আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষ্যে কাজী আল মামুন আদালতকে বলেন, ২০১৬ সালের জুন মাসে তাঁর খালু কামরুল তাঁকে বলেন, তাঁর বিকাশ নম্বর আছে কি না। এসপি বাবুল আক্তারের এক লোক তাঁর কাছে কিছু টাকা পাঠাবেন। তাঁর নম্বরে কেন টাকা পাঠাবেন—প্রশ্ন করা হলে কামরুল উত্তর দেন, তিনি চট্টগ্রামের বাইরে আছেন। টাকাগুলো যাতে নগদ করে রাখা হয়। তাঁর (কামরুল) কোনো লোক যোগাযোগ করলে যাতে তাঁকে টাকাগুলো পাঠানো হয়। ২০১৬ সালের ১০ জুন সন্ধ্যায় একটি মুঠোফোন থেকে কল করে কামরুলকে চেনেন কি না, মামুনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। নিজেকে বাবুল আক্তারের পরিচিত লোক পরিচয় দেওয়া হয়। তখন মামুন জানান, কামরুল তাঁর খালু। পরে দুটি বিকাশ নম্বর দেওয়া হলে লোকটি মামুনের দুটি নম্বরে ৫০ হাজার টাকা ও মামুনের বন্ধু মোস্তাইনের এজেন্ট নম্বরে ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা পাঠান।

মামুন সাক্ষ্যে আরও বলেন, তাঁর বন্ধু মোস্তাইনের বিকাশে পাঠানো টাকাগুলো নগদ করে রাখেন। আর তাঁর নিজের মুঠোফোনে পাঠানো টাকাগুলো থেকে যায়। দুই দিন পর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে এক ব্যক্তি নিজেকে কামরুলের লোক পরিচয় দিয়ে ফোন করেন। পরে তাঁর কাছে কামরুলের নির্দেশমতো এক লাখ টাকা পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মো. আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, কামরুলের আত্মীয় মামুন তাঁর সাক্ষ্যে বাবুলের নির্দেশে তাঁর কাছে এক লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে বাবুলের এক বন্ধু পাঠানোর কথা বলেছেন। পরে তা কামরুলের লোককে দিয়ে দেন। সাক্ষ্য দেওয়ার পর তাঁকে বাবুলের আইনজীবীরা জেরা করেছেন। আদালত জেরা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি রেখেছেন।