কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের সময় স্পর্শকাতর, নির্মম ও বড় বড় হত্যাকাণ্ডগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত শেষ করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার চেষ্টার কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তদন্ত সংস্থায় এখন পর্যন্ত ১৯টি অভিযোগ জমা পড়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোনো কিছু ঠিক করা হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি যে যেগুলো সবচেয়ে বেশি সেনসেটিভ (স্পর্শকাতর), সেগুলো প্রথমে নিয়ে আসব। সেগুলোর তদন্ত আগে শেষ করার চেষ্টা করব। ঢাকা শহরে সবচেয়ে বড় বড় হত্যাকাণ্ড যেগুলো হয়েছে—যেমন উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, মিরপুর ও আশুলিয়াতে হয়েছে; এই যে নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং যেগুলো জাজ্বল্যমান আছে—এইগুলো আলাদা আলাদা করে তদন্ত শেষ করে দ্রুত বিচারের জন্য নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে। এর বাইরে যেমন আলোচিত হচ্ছে রংপুরের আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, সেটিও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চেষ্টা করা হবে—এভাবে চিন্তা করছি।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘...সরকারের কাছে আমরা অনুরোধ করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনালটা পুর্নগঠন হোক। ট্রাইব্যুনাল পুর্নগঠন হলে কাজগুলো খুব দ্রুতগতিতে এগোবে। তদন্ত এগোবে, আমাদের প্রস্তুতিগুলো এগেবে। সেটার জন্য আমরা কাজ করছি। সে চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে (ট্রাইব্যুনাল) নিরপেক্ষ বিচারক লাগবে। আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য বিচারক লাগবে।...আমরা চাই এমন সব বিচারক এখানে দেওয়া হোক, যাঁদের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।...সে কারণে সরকারকে নানা দিক বিবেচনা করতে হচ্ছে। এই বিবেচনা করার কারণেই তাদের গোছাতে একটু সময় লাগতেই পারে। সেই সময়টা দিতে হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত সংস্থা এবং আমাদের কাছে যেগুলো আসছে, এগুলো কিন্তু সরাসরি মামলা নয়। এগুলো তথ্য ও অভিযোগ আকারে আসছে। এগুলো যাচাই–বাছাই করে আমরা যখন কোর্টের কাছে পিটিশন আকারে দায়ের করব, তখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের অধীন মামলা হবে। সুতরাং সেই মামলা হওয়ার আগপর্যন্ত নাম এলেই তিনি আসামি হয়ে যাচ্ছেন না, অন্তত এখানে (ট্রাইব্যুনাল) হচ্ছেন না। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বা থানার ব্যাপারটি আলাদা।’ তিনি বলেন, ‘অভিযোগকারীরা যে অভিযোগ দিচ্ছেন, সেগুলো আমরা যাচাই–বাছাই সাপেক্ষে ট্রাইব্যুনালের কাছে দাখিল করব। সুতরাং ওখানে ভুলভ্রান্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করি।’
এ সময় প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ ও আবদুল্লাহ আল নোমান উপস্থিত ছিলেন।