মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে দেশটির লোকজনের বাংলাদেশে প্রবেশ এবং সেখান থেকে আসা গোলাবারুদে বাংলাদেশিদের হতাহতের ঘটনা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল সোমবার ও আজ সকাল পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ডের (সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি) ২২৯ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। এরপর আরও কেউ এসেছেন কি না, আমি জানি না। তবে আসার সম্ভাবনা আছে। তাঁরা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার ও পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের (মিয়ানমার) ৩০টির মতো মর্টার শেল আমাদের দেশের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে এবং দুজন নিহত হয়েছেন। আজ মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল এবং কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে আমাদের দেশের অভ্যন্তরে তাদের দেশের মানুষের প্রবেশ এবং সেখান থেকে গোলাবারুদ এসে পড়ার কারণে আমাদের মানুষ হতাহত হওয়া—এই পুরো জিনিসটা নিয়েই তাদের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যখন আমরা কাজ করছি, সেই প্রেক্ষাপটে এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য। এটি আমরা জানিয়েছি। বিজিপির সদস্য যাঁরা পরিবার নিয়ে থাকতেন, তাঁরা এসেছেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের করা প্রতিবাদ মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত তাঁর সরকারের কাছে পৌঁছে দেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। তাঁরা তাদের নাগরিকদের নিয়ে যাবেন, এই মর্মে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এখন পর্যন্ত তাদের কাছে নৌপথে নিয়ে যাওয়াটা বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারত সফরের সময় ওই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা রয়েছে। এখানে আমরা সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করব। যেহেতু মিয়ানমার ভারতীয়দের প্রতিবেশী রাষ্ট্র, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র—আমরা ভারতের সহযোগিতা সব সময় চেয়ে এসেছি, মিয়ানমার থেকে যাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে। সুতরাং এ বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবেই আলোচিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আগামীকাল বুধবার নয়াদিল্লি সফরে যাচ্ছেন।