রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়াতে পিটুনীতে নিহত সাহাব উদ্দিন
রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়াতে পিটুনীতে নিহত সাহাব উদ্দিন

কক্সবাজারে তরুণকে কুপিয়ে হত্যা

কক্সবাজারের রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের বালুবাসা গ্রামে সাহাব উদ্দিন (২৩) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি একই ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া তিতারপাড়া গ্রামের এমদাদ মিয়ার ছেলে। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১২টায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, আর্থিক লেনদেন বিষয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন সাহাব উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের দাবি, স্থানীয় তিন ব্যক্তিকে জিম্মি করে তাঁদের কাছে থাকা নগদ টাকা লুটের সময় গণপিটুনিতে সাহাব উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে।

বালুবাসা গ্রামের বাসিন্দাদের কয়েকজন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামুর গর্জনিয়া বাজারে গরু বিক্রির টাকা নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন কচ্ছপিয়ার বালুবাসা গ্রামের ওবাইদুল আকবর, আনসার উল্লাহসহ তিন বন্ধু। তাঁরা বালুবাসা রাস্তার মাথা এলাকায় পৌঁছালে সাহাব উদ্দিনসহ একদল অস্ত্রধারী তাঁদের মোটরসাইকেল থামিয়ে নগদ ৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালান। হামলা চালিয়ে ওবাইদুল আকবরকে আহত করা হয়। এ সময় বাধা দিলে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে এসে সাহাব উদ্দিনকে গণপিটুনি দেয়। সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে থাকা দলের অন্য সদস্যরা পালিয়ে গেছেন। স্থানীয় কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, সাহাব উদ্দিন দলবল নিয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে এসেছিলেন। এলাকাবাসীর গণপিটুনির পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

সালাহ উদ্দিন নামে সাহাব উদ্দিনের এক নিকটাত্মীয় প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শনিবার গভীর রাতে তাঁকে ফোন দিয়ে এক ব্যক্তি জানান সাহাব উদ্দিনকে বালুবাসা গ্রামে মেরে ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর সাহাব উদ্দিনের আত্মীয়স্বজনেরা ঘটনাস্থলে যান। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। সাহাব উদ্দিনের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।

স্থানীয় গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রুবেল দেবনাথ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় সাহাব উদ্দিন ও ওবাইদুল আকবরকে উদ্ধার করা হয়। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাহাব উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী। বিকেল তিনটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে সাহাব উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্রের কোপের আঘাত রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সাহাব উদ্দিন ও ওবাইদুল আকবরের মধ্যে আর্থিক লেনদেনের জের ধরে কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কুপিয়ে সাহাব উদ্দিনকে হত্যা করা হয়। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওসি আরও বলেন, নিহত তরুণের বাবা বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।