জনপ্রিয় ও সিরিয়াস সাহিত্যকে অনেকেই আলাদা ধারা বলে মনে করেন। এই দুই ধারার সম্মিলন ঘটেছিল সদ্য প্রয়াত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের লেখায়। তাঁর বহুল জনপ্রিয় লেখার মধ্যেও ছিল ইতিহাস ও সময়ের কথার সমন্বয়। সমরেশ মজুমদারকে নিয়ে এক স্মরণসভায় আলোচকদের বক্তব্যে উঠে আসে এসব কথা।
আজ শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে অনুষ্ঠিত হয় সমরেশ মজুমদার স্মৃতিসভা। সেখানে কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি কথা বলেন সমরেশ মজুমদারের সাহিত্যে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে। তিনি বলেন, গল্পটাকে গল্প হিসেবে পাঠকের কাছে কীভাবে পৌঁছে দিতে হবে তা খুব ভালো জানতেন লেখক।
আবিষ্কার প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হাসানের স্মৃতিচারণায় উঠে আসে সমরেশ মজুমদারের লেখকসত্তার প্রবল ব্যক্তিত্বের কথা। কলকাতা পাবলিশার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে স্মৃতিচারণা করেন সমরেশ মজুমদারের। ভারত থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বাবার স্মৃতিচারণা করেন সমরেশ মজুমদারের মেয়ে দোয়েল মজুমদার।
মৃত্যুর কয়েক দিন আগেও সমরেশ মজুমদার বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি বলে জানান বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম। তিনি বলেন, লেখক ছিলেন রাজসিক চরিত্রের। তাঁর সৃষ্টি অনিমেষ চরিত্রটি স্বয়ং লেখকের মধ্যেও ছিল।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের কথায় উঠে আসে সমরেশ মজুমদারের লেখায় স্থান পাওয়া জলপাইগুড়ির চা–বাগান ও নকশালবাড়ী আন্দোলনের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, আশির দশকে বড় হওয়া পাঠকমাত্রই জানেন, বাংলা সাহিত্যে সমরেশ মজুমদার কতখানি প্রভাব রেখেছিলেন।
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন। সমরেশ মজুমদারের সৃষ্টি দীপাবলি ও অনিমেষ চরিত্রের কথা বলেন তিনি। এর সূত্র ধরে উঠে আসে সাহিত্যে জনপ্রিয় ও সিরিয়াস—দুই ধারার প্রসঙ্গ। ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, এই দুই ধারার সম্মিলন ঘটেছিল সমরেশ মজুমদারের সাহিত্যে।
স্মরণসভার সঞ্চালনা করেন কবি ও সাংবাদিক হাসান হাফিজ। কবি শামীমা চৌধুরী পাঠ করেন সমরেশ মজুমদারের লেখা থেকে। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নবযুগ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী অশোক রায় নন্দী, কবি ও নাট্যকার ফরিদ আহমেদ, কবি ফারুক মাহমুদ এবং নিউইয়র্ক প্রবাসী লেখক সালেম সুলেরি।