ক্লাউড সেবা দেওয়ার মধ্য দিয়ে ২০১১ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে ‘ক্লাউডলি’ (Cloudly)। বাংলাদেশে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডব্লিউএস) ও গুগল ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের (জিসিপি) প্রথম প্রিমিয়ার পার্টনার ক্লাউডলি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ক্লাউডঅপস (CloudOps) প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজের অবস্থান দৃঢ় করেছে ক্লাউডলি।
প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বমানের ক্লাউড ব্যবস্থাপনা, ডেভঅপস অ্যান্ড অটোমেশন (DevOps & Automation) এবং ক্লাউড-নেটিভ সলিউশন (Cloud-Native Solution) দিচ্ছে। এটি বাংলাদেশে ক্লাউড সেবা গ্রহণকারীদের ক্লাউড ব্যবহার ও কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করছে।
বাংলাদেশে প্রবেশের শুরুতেই ক্লাউডলি দেশের আইটি খাতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসে। প্রথমদিকের ক্লাউড সেবা প্রদানকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি এমন উদ্ভাবনী ক্লাউড সমাধান সরবরাহ করে, যা ক্লাউড সেবা গ্রহণকারীদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করতে সক্ষম করে। এডব্লিউএস এবং জিসিপির সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে ক্লাউডলি বিশ্বস্ততা, আস্থা ও সেরা ক্লাউড সরবরাহক হিসেবে এই খাতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে।
এক দশক ধরে ক্লাউডলি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন কোম্পানির জন্য ক্লাউড সেবা প্রদান করছে। মিডিয়া, শিক্ষা, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, টেক কোম্পানি, স্বাস্থ্যসেবা, খুচরা ও ই-কমার্স এবং ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত—সর্বত্র ক্লাউডলি একটি নির্ভরযোগ্য পার্টনার হিসেবে কাজ করছে।
এই মুহূর্তে বিভিন্ন খাতের বিস্তৃত অভিজ্ঞতার ফলে ক্লাউডলি যেকোনো ধরনের সার্ভিস সরবরাহ করতে পারে। ব্যাংকিং খাতের উচ্চমানের ক্লাউড অবকাঠামো নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য স্কেলেবল সমাধান সরবরাহ করে। এটা সম্ভব হয়েছে ক্লাউডলির সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ দলের কার্যকর ভূমিকার কারণে, যা ক্লাউড সেবা গ্রহণকারীদের ব্যবসার প্রবৃদ্ধি ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।
ক্লাউডলির মূল শক্তি হলো তাদের ক্লাউডঅপস সেবা, যা ক্লাউড অবকাঠামো নিয়মিত ব্যবস্থাপনা, পর্যবেক্ষণ এবং অপটিমাইজেশন করে। ক্লাউডঅপস সেবার মাধ্যমে ক্লাউড সেবা গ্রহণকারীরা নিজেদের ক্লাউড অবকাঠামোকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে পারে। পাশাপাশি উচ্চমানের নিরাপত্তা, খরচ-সাশ্রয় এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। ক্লাউডলি প্রথম থেকে ক্লাউড মাইগ্রেশন থেকে শুরু করে নিয়মিত ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত একাধিক সেবা প্রদান করে, যাতে ক্লাউড সেবা গ্রহণকারীরা নিজেদের ডেভেলপমেন্ট এবং ব্যবসার ওপর ফোকাস করতে পারে।
ক্লাউডঅপসের পাশাপাশি ডেভঅপস এবং অটোমেশন নিয়ে কাজ করে ক্লাউডলি। এটি আধুনিক আইটি অপারেশনের জন্য অপরিহার্য। ডেভঅপস মূলত ডেভেলপমেন্ট ও অপারেশনস টিমের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি দ্রুত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও ডেলিভারি নিশ্চিত করে। ক্লাউডলির ক্লাউডঅপস সেবা ব্যবহারকারীকে ডেপ্লয়মেন্ট সময় বাঁচায়, নিরবচ্ছিন্ন ডেভেলপমেন্ট সহযোগিতা করে এবং পুরো প্রসেসকে একেবারে ঝামেলামুক্ত করতে সহায়তা করে।
অটোমেশন—ক্লাউড ব্যবহারকারীর রুটিন কাজগুলোকে আরও সহজ করে, যা ভুলের পরিমাণ শূন্যের কোটায় নিয়ে আসে এবং অতিরিক্ত রিসোর্সেস ব্যবহারের হাত থেকে বাঁচায়। ক্লাউডলির অটোমেশন সল্যুশনে ক্লাউড ব্যবহারকারী কার্যক্রম স্কেল করতে পারে এবং উচ্চমানের কার্যক্ষমতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারে।
আজকের দ্রুততম গতির ডিজিটাল বিশ্বে প্রতিযোগিতামূলক থাকার জন্য ক্লাউড-নেটিভ সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ক্লাউড-নেটিভ প্রযুক্তিগুলো ব্যবসাগুলোকে দ্রুত অ্যাপ্লিকেশন তৈরি ও ডেপ্লয় ও স্কেল করতে এবং পরিবর্তিত বাজার পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে সহায়তা করে। ক্লাউডলির ক্লাউড-নেটিভ সমাধানগুলো বিশেষভাবে খুচরা, স্বাস্থ্যসেবা এবং আর্থিক খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে গতিশীলতা এবং স্কেল যোগ্যতা অত্যাবশ্যক।
বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বে অনেক দেশে ব্যবসা রয়েছে ক্লাউডলির। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়। যেখানে ১০০টিরও বেশি বৈশ্বিক ক্লায়েন্ট এবং ৩৫০টিরও বেশি সফল প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। এই সাফল্য এসেছে শুধু ক্লাউডলির উচ্চমানের সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে।
আধুনিক ও অর্থসাশ্রয়ী ক্লাউড টেকনোলজি বাংলাদেশে বিস্তারের অন্যতম অন্তরায়। এর থেকে উত্তরণের ব্যাপারে ক্লাউডলির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও টেকনোলজি অ্যাডভাইজর এবং মেটার (ফেসবুক) ডিরেক্টর অব ইঞ্জিনিয়ারিং শাহরিয়ার ইমতিয়াজ রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে ডেটা সেন্টার স্থাপনে দুর্নীতির প্রবণতা রয়েছে। সেটা কমাতে হলে লোকাল ডেটা সেন্টারের পরিবর্তে ক্লাউড টেকনোলজিতে পদার্পণ করা উচিত। অন্যদিকে ক্লাউড টেকনোলজি অর্থসাশ্রয়ী, আধুনিক ও দুর্নীতির ঝুঁকি কম। তাই পরিবর্তন আনার সময় এখনই।’
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ক্লাউডঅপস কোম্পানি হিসেবে ক্লাউডলি দেশের আইটি খাতে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন সেক্টরে ক্লাউড সেবা প্রদানের মাধ্যমে ক্লাউডলি বাংলাদেশের টেকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সেক্টরের ভবিষ্যৎকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করছে। তাদের সমাধানগুলো কোম্পানিগুলোকে কার্যকারিতা, নিরাপত্তা এবং স্কেল যোগ্যতার নতুন দ্বার খুলে দেয়, যাতে তারা বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।
বাংলাদেশে এবং বিদেশে ক্লাউডলির উৎকর্ষ ও উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতি প্রতিষ্ঠানটিকে আইটি শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যেহেতু আরও বেশি ব্যবসা তাদের আইটি চাহিদার জন্য ক্লাউডের দিকে ঝুঁকছে, ক্লাউডলি সব আকারের কোম্পানির প্রবৃদ্ধি, উদ্ভাবন ও ডিজিটাল যুগে সফল হতে সহায়তা করছে।