ঢাকার আদালতে আরও তিন মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৬৮ জন নেতা–কর্মীর সাজা হয়েছে। দণ্ডিত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ রাজধানীর দক্ষিণখান, চকবাজার ও বংশাল থানা ও ওয়ার্ডের নেতা–কর্মী।
এ নিয়ে ঢাকায় গত তিন মাসে অন্তত ৩৭টি মামলার রায় হয়েছে। এসব মামলায় সাজা হয়েছে ৬৫২ জন নেতা-কর্মীর। এর মধ্যে অনেকে আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। মামলাগুলোতে বেআইনি সমাবেশ, পুলিশের কাজে বাধা, যানবাহন ভাঙচুর, আগুন দেওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
আজ মঙ্গলবার যে তিনটি মামলার রায় হয়েছে, সব কটির বাদী পুলিশ। এর মধ্যে দুটি মামলা করা হয়েছিল ২০১৮ সালে গত সংসদ নির্বাচনের আগে। আরেকটি হয়েছিল ২০১৪ সালের নির্বাচনের দুই মাস আগে।
এর মধ্যে ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দক্ষিণখান থানায় করা একটি মামলায় রায় দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম। রায়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৩৮ জন নেতা–কর্মীর আড়াই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দক্ষিণখানের প্রেমবাগ মোড়ের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীরা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। খবর পেয়ে দক্ষিণখান থানা-পুলিশ সেখানে গেলে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৭৬ জন নেতা–কর্মী পুলিশের ওপর আক্রমণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।
দক্ষিণখান থানার মামলার আগের দিন, ১৭ সেপ্টেম্বর প্রায় একই রকম অভিযোগে আরেকটি মামলা হয় রাজধানীর চকবাজার থানায়। তাতে পুলিশ বলেছে, ওই দিন চকবাজার থানা বিএনপির নেতা–কর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল নিয়ে বকশীবাজার থেকে আলিয়া মাদ্রাসার দিকে আসছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও চারটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। মামলায় পুলিশ ৪৩ জনের নাম উল্লেখ করে। ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ২৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জন পুলিশ সদস্য আদালতে সাক্ষ্য দেন। আসামিপক্ষে ১১ জন সাফাই সাক্ষী দেন।
এই মামলার রায় ঘোষণা করেন সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাউল্লাহ। রায়ে ১৪ জনকে আড়াই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর বংশাল থানায় করা পুলিশের একটি মামলায় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ১৬ জনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুলতান সোহাগ উদ্দিন এই রায় দেন। মামলায় হরতালের সময় পুলিশের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা আইনজীবী সমিতি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় প্রতিদিনই বিএনপির নেতা–কর্মীদের সাজা হচ্ছে। তাঁরা ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না।