কুতুবখালী পর্যন্ত চালু হলে পুরো সুফল পাওয়া যাবে

মো. হাদিউজ্জামান
মো. হাদিউজ্জামান

ঢাকা উড়ালসড়কের নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহনবিশেষজ্ঞ মো. হাদিউজ্জামান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মোহাম্মদ মোস্তফা

প্রশ্ন

প্রথম আলো: উড়ালসড়কটি ঢাকার যানজট নিরসনে কী প্রভাব ফেলতে পারে? এই উড়ালসড়কের মূল উপকারভোগী কারা হবেন?

অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান: উড়ালসড়কটির এই সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশটি ঢাকা শহরের ভেতর থেকে উঠেছে, আবার ভেতরেই নেমেছে। যাঁরা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারকারী, তাঁরা দিনের বেলা তথা পিক আওয়ারে এটি ব্যবহার করে সুবিধা পাবেন। তবে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে রাতে যান চলাচল এমনিতেই কমে যায়। তাই রাতে যানজট নিরসনে খুব বেশি ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি না। কারণ, এটা টোল দিয়ে ব্যবহার করতে হবে।

প্রশ্ন

প্রথম আলো: উড়ালসড়কটির ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কেমন হওয়া দরকার? ওঠানামার জায়গাগুলো সম্পর্কে যদি বলেন।

অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান: যেহেতু এই অবকাঠামো আধুনিক, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও আধুনিক হওয়া উচিত। এখন যে ট্রাফিক নির্দেশিকাগুলো আছে, এটা স্থির নির্দেশিকা। ‘রিয়েল টাইমে’ যাঁরা এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করবেন, কোন র‍্যাম্প (ওঠানামার স্থান) ব্যবহার করলে তাঁরা সহজে নিচের সড়কে চলে যেতে পারবেন, এই নির্দেশিকা দেওয়া হলে উড়ালসড়কের সর্বোচ্চ ব্যবহার হতে পারে। সে জন্য বলব উড়ালসড়কে ডিজিটাল সিস্টেম বাস্তবায়ন করা উচিত। এ ছাড়া উড়ালসড়কে ওঠা ও নামার ক্ষেত্রে আলাদা লেনের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে সেখানে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।

প্রশ্ন

প্রথম আলো: উড়ালসড়কটি আরও অনেক আগেই চালু হওয়ার কথা ছিল। বাকি অংশ চালুর বিষয়ে আপনার কোনো পরামর্শ আছে কি না?

অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান: আমার পরামর্শ হচ্ছে বাকি যে অংশটা অর্থাৎ কুতুবখালী পর্যন্ত এটা দ্রুত শেষ করতে হবে। কারণ, এই প্রকল্পের যে উপযোগিতার কথা বলা হচ্ছে যে আমি ঢাকাকে বাইপাস করে চলে যাব, নগরের মধ্যে ঢুকতে না হয়, সেটা করতে হলে এটা দ্রুত শেষ করতে হবে। উড়ালসড়কের বাকি অংশের কাজ শেষ করতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কারণ, সামনের অংশে মগবাজার উড়ালসড়ক, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়ক ও কমলাপুর ডিপো রয়েছে। এসব জায়গা খুবই স্পর্শকাতর। তাই পরিকল্পনা এমনভাবে করতে হবে, যাতে বাস্তবায়নের মুখে নতুন বাধা না আসে।

প্রশ্ন

প্রথম আলো: টোল হার নিয়ে কী বলবেন?

অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান: যদি উড়ালসড়কটি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যয়ে শেষ করা যেত, তাহলে টোল আরও গণমানুষবান্ধব ও গণপরিবহনবান্ধব হতে পারত। এখন টোলটা কিছু বেশি বলে মনে করি। তবে টোল নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকার এবং যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন, তাঁদের কৌঁসুলি হতে হয়। কারণ, টোল অনেকের কাছে বেশি মনে হতে পারে। 

বিমানবন্দর সড়কে রাতে যেহেতু যানবাহনের চাপ কমে যায়, তাই দিন ও রাতে টোলের হার ভিন্ন ভিন্ন হওয়া উচিত।