বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচি চলাকালে সংঘাতে আহত অন্তত ১১৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত অন্তত ৩৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের মধ্যে অনেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন ও কেউ কেউ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, পল্টন, নয়াবাজার, শনির আখড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এবং মুন্সিগঞ্জ জেলায় আহত শিক্ষার্থী, পথচারী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে অনেককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জামাল উদ্দিন (৫০), সাব্বির (১৮) ও মোদাচ্ছির হোসেন (২৩) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অপরদিকে রাজধানীর শাহবাগে মাহিন (২৫), হাসিবুর রহমান (৩০), সুভাষ (২৪), তানভীর রহমান (২০), সেলিম (৪০), রিমন (২৩) ও হৃদয় (২০) ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন। পল্টনে ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক শাহরিয়ার আবির (২৮) আর সংঘর্ষে আহত হয়েছেন শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন (২০) ও মঞ্জিল মোল্লা (৫০)। এ ছাড়া বংশালে সাইফুল (৩০) ও আতিক (২৭), গুলিস্তানে শাহজালাল (৩০), নয়াবাজারে অজ্ঞাতনামা এক তরুণ (২৫), সায়েন্স ল্যাবে দোকানের কর্মচারী রিয়ন (১৬) ও শিক্ষার্থী কিবরিয়াকেও (২৩) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের কদম ফোয়ারা এলাকায় ছররা গুলিতে দৈনিক আমাদের সময়ের প্রধান ফটো সাংবাদিক মেহেরাজ (৪৮) এবং আজকের দৈনিকের নুর হোসেন (৪৫) আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নেওয়া ও ভর্তি হওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি জানান, আহত ব্যক্তিদের অনেকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন।
আজ রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অন্তত ৮ জনকে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব সংলগ্ন ল্যাবএইড হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের বয়স ১৫ বছর থেকে ২৪ বছরের মধ্যে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, তাঁদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এই হাসপাতালে ছররা গুলিতে আহত একজনের সঙ্গে কথা হয় কথা হয়। নাম না প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জিগাতলা এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন।
বাম হাতে একটি রাবার বুলেটের আঘাত নিয়ে ল্যাবএইড হাসপাতালে এসেছেন একজন। নিজেকে আন্দোলনকারী উল্লেখ করে তিনি জানান, ধানমন্ডি-৪ এ তাঁর গায়ে রাবার বুলেট লেগেছে।
সায়েন্স ল্যাব এলাকা বেলা ৩টা পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সায়েন্স ল্যাব সংলগ্ন স্টার হোটেল এলাকাও তখন পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে দেখা যায়।