জুলাই বিপ্লবের পর চারদিকে সংস্কারের বাতাস লাগলেও দেশের আবাসনব্যবস্থা নিয়ে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন নগর–পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশের আবাসন মডেল কেমন হবে, কারা আমাদের এই রূপরেখা তৈরি করে দেবে, তা আমাদের জানা দরকার।’
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপি কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশের নগর এলাকার আবাসন পরিকল্পনার সংস্কার ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় আদিল মুহাম্মদ খান এ কথাগুলো বলেন। বিশ্ব নগর দিবস-২০২৪ ও বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে এ আলোচনার আয়োজন করে বিআইপি।
পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, বিশ্বব্যাপী অক্টোবর মাসকে ‘আরবান অক্টোবর’ বলা হয়। কারণ, এই মাসেই একই সঙ্গে ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাবিটেট ডে’, ‘ওয়ার্ল্ড সিটিস ডে’ ও ‘ওয়ার্ল্ড টাউন প্ল্যানিং ডে’ পালন করা হয়।
বিআইপি সভাপতি বলেন, ‘আমরা যে আবাসনের স্বপ্ন দেখি, তা কি আমরা গত ২০-৩০ বছরে করতে পেরেছি? আমরা কি এই রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য উন্নত দেশগুলোকে অনুসরণ করব, নাকি আমাদের গ্রামীণ অঞ্চলকে কেন্দ্রীভূত করে পরিকল্পনা করব, সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে।’
আলোচনা সভায় বিআইপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, শহরের সুযোগ-সুবিধা বেশি হওয়ায় গ্রামের মানুষ বেশি শহরে আসছেন। পরিকল্পনাবিদেরাই এসব সমস্যার সমাধান করতে পারেন। শিক্ষাব্যবস্থায় পঞ্চম শ্রেণি থেকে নগর–পরিকল্পনা যুক্ত করতে হবে। পরিকল্পনাবিদদের সঠিক মূল্যায়ন না হওয়ায় আজ আবাসন পরিকল্পনার এ অবস্থা বলেও দাবি করেন তিনি।
বড় ধরনের ধস হওয়ার আগে নগর এলাকার কাঠামো নির্ধারণ করা, জাতীয় আবাসন নীতি প্রয়োগ করা ও প্লট–বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে বলে আলোচনা সভায় মত দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাশেদা রওনক খান। তিনি আরও বলেন, আবাসন প্রকল্প নগর স্বার্থেই হওয়া প্রয়োজন।
প্রকৌশলী আবু সাদেক বলেন, ‘ঢাকা অঞ্চলে আমাদের পর্যাপ্ত কোনো পরিকল্পনা নেই। তাই আমাদের সংস্কারের আগে টেকসই একটি রূপরেখা বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। তা ছাড়া এই রূপরেখা বাস্তবায়নে আমাদের যে বস্তিতে বসবাসকারী নিম্নবিত্ত জনগোষ্ঠী রয়েছে, তাদের এর কেন্দ্র রেখে চিন্তা করতে হবে।’
গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ আন্দোলন কর্মী আমিরুল রাজীব, পরিকল্পনাবিদ আবু নাঈম সোহাগ, বুয়েট শিক্ষার্থী মধুমিতা আক্তার প্রমুখ।