ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতির জেরে ১৩ কূটনীতিককে তলবের বিষয়টি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে উঠে এসেছে।
গতকাল বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর (হিরো আলম) ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১৩ কূটনীতিককে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০ জুলাই একই কারণে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীকে তলব করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানাচ্ছে। সব পশ্চিমা মিত্র ও উন্নয়ন সহযোগীরাও একই আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার করছে উল্টোটা। তারা রাষ্ট্রদূতদের তলব করছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
জবাবে প্যাটেল বলেন, একটা বিষয়ে তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট। তা হলো, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে।
প্যাটেল আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বাংলাদেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনে দেশটির সঙ্গে একত্রে কাজ করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে। এটা দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তাঁরা বিশ্বাস করেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি উভয় দেশের একটি অভিন্ন অগ্রাধিকার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির সরকারের অনেক কর্মকর্তাও বলেছেন, এটা তাঁদেরও লক্ষ্য।
১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোট চলাকালে হামলার শিকার হন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম। তাঁকে রাস্তায় ফেলে পেটান নৌকা প্রতীকের ব্যাজধারী ব্যক্তিরা।
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করেছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। এই ঘটনায় ঢাকায় জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়কারী শেলডন ইয়েটকে ২০ জুলাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করে সরকার। গোয়েন লুইসের অনুপস্থিতিতে তখন বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করছিলেন।
একই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি যৌথ বিবৃতি দেয়। এই ঘটনায় গতকাল ১৩ বিদেশি মিশনের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে সরকারের অসন্তোষের কথা জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।