চট্টগ্রাম আদালত ভবন
চট্টগ্রাম আদালত ভবন

পাঁচ বছর পর শেষ হলো চট্টগ্রামের কোকেন মামলার সাক্ষ্য

প্রায় পাঁচ বছর পর শেষ হলো চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেনের চালান জব্দের ঘটনায় হওয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান আইনের দুই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ। আজ বুধবার চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরা সাক্ষ্য গ্রহণের সমাপ্তের এই আদেশ দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ প্রথম আলোকে বলেন, আদালত দুই মামলায় ৩১ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন। আগামী ১৯ নভেম্বর আসামিদের ৩৪২ ধারায় পরীক্ষার জন্য দিন ধার্য রেখেছেন।

২০১৫ সালের ৬ জুন পুলিশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এরপর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি সূর্যমুখী তেল ছিল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ চারটি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ চালান উরুগুয়ের মন্টেভিডিও থেকে জাহাজীকরণ হয়। পরে তা সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ এর আগে কখনোই বলিভিয়া থেকে সূর্যমুখী ভোজ্যতেল আমদানি করেনি। তা ছাড়া তরল কোকেনকে গুঁড়া বা পাউডার কোকেনে রূপান্তর করার মতো প্রযুক্তি বা যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে নেই।

কোকেন জব্দের ঘটনায় চট্টগ্রামের বন্দর থানায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান আইনের ধারায় একটি মামলা হয়। আসামি করা হয় চালানটির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদকে। তদন্ত শেষে কোকেন জব্দের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় র‍্যাব। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নূর মোহাম্মদের প্ররোচনা ও যোগসাজশে বিদেশে অবস্থানরত পলাতক দুই আসামির মাধ্যমে তেলের আড়ালে আমদানি নিষিদ্ধ কোকেন আনা হয়েছে। অবশ্য নূর মোহাম্মদের পরিবার শুরু থেকে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে কেউ চালানটি এনেছে। তাঁরা চালানটির জন্য এলসি (ঋণপত্র) খোলেননি। অবশ্য আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। দুটি মামলায় আসামি করা হয় নুর মোহাম্মদসহ ১০ ব্যক্তিকে। ২০২০ সালের শুরুর দিকে এই মামলা দুটির সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন নুর মোহাম্মদের ভাই মোস্তাক আহম্মদ, কসকো-বাংলাদেশ শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক এ কে এম আজাদ, সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহেদী আলম, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, লন্ডনপ্রবাসী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ফজলুর রহমান ও মৌলভীবাজারের বকুল মিয়া।