ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, স্যার ফজলের জীবন-দর্শন নিয়ে স্মৃতিচারণা, শিল্পকর্ম প্রদর্শনী, পোস্টার উপস্থাপনা ও বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ প্রকল্পের সম্মাননা প্রদান।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয় স্যার ফজলে হাসান আবেদ বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথিকৃৎ। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর ঢাকায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ ও কাজ সারা বিশ্বের মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস।
স্যার ফজলে হাসান আবেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিবিশন গ্যালারিতে মাসব্যাপী শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজেসের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা লেডি সৈয়দা সারওয়াত আবেদ।
প্রদর্শনীতে স্যার ফজলের পছন্দের শিল্পকর্ম, শিক্ষার্থীদের তৈরি চিত্রকর্ম এবং তাঁর সামাজিক উদ্যোগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন পোস্টার প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়। তিনজন শিক্ষার্থীর শিল্পকর্মকে পুরস্কৃত করা হয় এবং দুজনকে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব আর্কিটেকচার অ্যান্ড ডিজাইনের ডিন অধ্যাপক ফুয়াদ হাসান মল্লিক, ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিটেকচারের চেয়ারপারসন জয়নাব ফারুকী আলী, রেজিস্ট্রার ডেভিড ডাউল্যান্ড ও অফিস অব কমিউনিকেশনসের ডিরেক্টর খায়রুল বাশার।
অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘স্যার ফজলে হাসান আবেদের আদর্শ ও কর্মময় জীবন আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী বা দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক পর্যায়ে ব্র্যাকের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি সারা জীবন আমাদের সবার অন্তরে বেঁচে থাকবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটারে ‘আবেদ ভাইকে ঘিরে কথকতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে স্যার ফজলের জীবন–দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ইরাম মারিয়াম। তিনি তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন স্যার ফজলে কীভাবে শিশুদের মনে সাহস জোগাতেন এবং তাদের স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করতেন।
বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে ‘তুমি রবে নীরবে’ শীর্ষক স্মরণসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় স্যার ফজলের পছন্দের দুটি কবিতা আবৃত্তি করেন রেজিস্ট্রার ডেভিড ডাউল্যান্ড।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। স্যার ফজলের আদর্শ কীভাবে শিক্ষার্থীদের গবেষণা এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে অনুপ্রাণিত করেছে, আলোচকেরা সেটি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন খায়রুল বাশার। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ১৮টি সামাজিক প্রকল্পকে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়।
এর আগে ১৮ ডিসেম্বর স্যার ফজলের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একটি দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দাবা ক্লাব।