সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ

পথচারী সালাউদ্দিনের লাশ নিতে মর্গে দুই নারী

পথচারী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের লাশ নিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে এসেছেন দুই নারী
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন লিমিটেড কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত পথচারী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের (৪০) লাশ নিতে এসেছেন দুই নারী। তাঁরা নিজেদের সালাউদ্দিনের স্ত্রী বলে দাবি করছেন।

সালাউদ্দিনের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে তাঁর লাশ নিতে মর্গে আসেন দুই নারী রোজিনা বেগম ও সেলিনা বেগম।

সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সীমা অক্সিজেন লিমিটেড কারখানাটি অবস্থিত। কারখানাটিতে শিল্পে ব্যবহৃত অক্সিজেন উৎপাদিত হতো। গতকাল শনিবার বিকেলে কারখানাটিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত ছয়জন নিহত হন। গুরুতর আহত ২৫ জন।

কারখানাটি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ছিলেন সালাউদ্দিন। বিস্ফোরণের পর কারখানা থেকে উড়ে আসা লোহার পাতের আঘাতে তিনি মারা যান।

রোজিনার ভাষ্য, ১৫ বছর আগে তাঁর সঙ্গে সালাউদ্দিনের বিয়ে হয়। তাঁর সংসারে দুই মেয়ে আছে। একজনের বয়স ১৩, আরেকজনের ৪ বছর। তাঁর বাড়ি সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকায়। তাঁর সঙ্গে গতকাল দুপুরে সালাউদ্দিনের কথা হয়েছিল। তিনি কাজে যাচ্ছিলেন বলে তাঁকে জানিয়েছিলেন।

সেলিনার ভাষ্য, আট বছর আগে তাঁর সঙ্গে সালাউদ্দিনের বিয়ে হয়। তাঁর কোনো সন্তান নেই।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, সালাউদ্দিনের স্ত্রী দাবিদার দুই নারীর পরিচয় যাচাই করা হবে। সমঝোতার মাধ্যমে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য পুলিশ কথা বলছে।

সালাহউদ্দিনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে বলে জানা গেছে। সীমা অক্সিজেন লিমিটেড থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সালেহ কার্পেট নামের কারখানার গুদামের অফিস সহকারী ছিলেন তিনি। বিস্ফোরণের সময় তিনি সালেহ কার্পেট কারখানার সামনে খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিস্ফোরণে উড়ে আসা একটি লোহার পাত তাঁর মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

সহকর্মীরা সালাউদ্দিনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যান দুই কিলোমিটার দূরের বিএসবিএ হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে আনা হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

সালেহ কার্পেট কারখানায় পণ্য নিয়ে আসা নুর মোহাম্মদ নামের এক ট্রাকচালক বলেন, কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী কারখানাটি ভাড়া নিয়ে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। সেখানে কাজ করতেন সালাহউদ্দিন। তিনি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। মালামাল গ্রহণ করে তা যথাস্থানে রাখতেন, চালানে সই করতেন তিনি।