পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ নেদারল্যান্ডসের এপোস্টিল কনভেনশনে দেশের পক্ষে ‘ইন্সট্রুমেন্ট অব একসেশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। সোমবার নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ নেদারল্যান্ডসের এপোস্টিল কনভেনশনে দেশের পক্ষে ‘ইন্সট্রুমেন্ট অব একসেশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। সোমবার নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সত্যায়িত নথিপত্র অন্য দেশে সত্যায়ন করতে হবে না: হাছান মাহমুদ

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন করা নথিপত্র এখন থেকে অন্য দেশে পুনরায় সত্যায়ন করা লাগবে না। ফলে প্রতিবছর বিদেশগামী বাংলাদেশিদের ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। সোমবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সোমবার নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশকে ‘দ্য কনভেনশন অন এবোলিশিং দ্য রিকয়ারমেন্ট অব লিগ্যালাইজেশন অব ফরেন পাবলিক ডকুমেন্ট’ বা এপোস্টিল কনভেনশন-১৯৬১-এর পক্ষভুক্ত করা হয়। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ নেদারল্যান্ডসের এপোস্টিল কনভেনশনে দেশের পক্ষে ‘ইন্সট্রুমেন্ট অব একসেশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে নেদারল্যান্ডস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে স্বাগত জানান। বক্তৃতায় হাছান মাহমুদ বাংলাদেশের লাখ লাখ নাগরিকের জন্য এই চুক্তির প্রয়োজনীয়তা ও তাৎক্ষণিক সুবিধাদি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, এর ফলে এখন থেকে বিদেশগামী ছাত্রছাত্রী, পেশাজীবী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিদেশে ভর্তি ও চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব সরকারি নথিপত্র সনাতন পদ্ধতিতে সত্যায়িত করতে হতো, তা দ্রুততর-সহজ ও সুলভভাবে করতে পারবে।

এই কনভেনশনে যোগদান বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এ চুক্তির ফলে দেশের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এর ফলে ই-এপিপি বা ইলেকট্রনিক এপোস্টিল প্রোগ্রাম পদ্ধতিতে সত্যায়ন করে ইলেকট্রনিক এপোস্টিল সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে, যার সত্যতা ও সঠিকতা সার্টিফিকেটে বিদ্যমান কিউআর কোড দিয়ে বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে যাচাই করা যাবে। এতে বিদেশগামী শিক্ষার্থী, পেশাজীবীদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও ভোগান্তি কমবে। পাশাপাশি প্রতিবছর বিদেশগামী বাংলাদেশিদের ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।’

বর্তমানে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, চাকরির আবেদন, বিদেশে স্থায়ী হওয়া, বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনসহ নানাবিধ প্রয়োজনে বিদেশগামী ও বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের বিভিন্ন দলিল (যেমন একাডেমিক সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন সনদ, বৈবাহিক সার্টিফিকেট ইত্যাদি) একাধিক কর্তৃপক্ষের সত্যায়নের প্রয়োজন হয়। দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সত্যায়নসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন শেষে সেবাপ্রার্থীগণকে পুনরায় বিদেশি দূতাবাস, সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে সত্যায়নের জন্য উপস্থিত হতে হয়, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ, শ্রমসাধ্য ও ব্যয়বহুল।

অনুষ্ঠান শেষে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রসচিব পল হুজিস পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সামগ্রিক উদ্যোগের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রশংসা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অন্যান্য দেশের মতো কনভেনশনে যোগদানের আট মাসের মধ্যে এতে পক্ষভুক্ত অন্য দেশগুলোর চূড়ান্ত সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ই-এপিপি বা ইলেকট্রনিক এপোস্টিল প্রোগ্রাম সম্পূর্ণভাবে চালু করা সম্ভব হবে।

ইন্সট্রুমেন্ট অব একসেশন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মু. রিয়াজ হামিদুল্লাহ্, নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হেড অব ট্রিটিজ ডিভিশন, ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল অব হেগ কনফারেন্স অন প্রাইভেট ইন্টারন্যাশনাল ল, দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ উইংয়ের মহাপরিচালক শাহ্ মো. তানভীর মনসুর ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।