বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা–সুবিধা আর দেওয়া হবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আজ সোমবার সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তাদেরকে বলেছি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের নানা কৃচ্ছসাধন করতে হচ্ছে। তাই রাষ্ট্রদূতদের যে বাড়তি নিরাপত্তা–সুবিধা দেওয়া হয়, সেটি আর অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে না।’
বিশেষ পরিস্থিতিতে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা–সুবিধা দেওয়া হয়েছিল বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কিন্তু এখন পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো। তাই কূটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তা–সুবিধা দিলে বিদেশিদের কাছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা নিয়ে ভুল বার্তা যায়। আমরা ভুল বার্তা দিতে চাই না।’
এ ছাড়া কয়েকটি দেশকে বিশেষ নিরাপত্তা–সুবিধা দেওয়ায় অন্যান্য দেশও তা চাইছিল বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সে কারণে আমরা দেখলাম, এভাবে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। তা ছাড়া বিভিন্ন দেশে আমাদের কূটনীতিকদেরও বাড়তি কোনো নিরাপত্তা–সুবিধা দেওয়া হয় না।’
এ বিষয়ে রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাধারণত বাংলাদেশ পুলিশ বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সব সময় পালন করে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে কয়েক বছর আগের একটি ঘটনা–পরবর্তী সময় থেকে কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অলিখিতভাবে গাড়িসহ মূলত নিয়মিত ট্রাফিক মুভমেন্টের (রাস্তায় চলাচল) সহায়তার জন্য বাড়তি কিছু লোকবল দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং নিয়ন্ত্রণাধীন আছে। তাই তাঁদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার আবশ্যকতা নেই। পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর কার্যপরিধি বৃদ্ধির জন্য এই বাড়তি সুবিধাটি এখন অব্যাহত রাখা যাচ্ছে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দূতাবাস থেকে একই ধরনের সুবিধার জন্য অনুরোধ করার একটি প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সে কারণে তাদের সবার সুবিধার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ আনসার বাহিনীতে একটি চৌকস দল তৈরি করেছে। বিদেশি কূটনীতিকেরা তাঁদের খরচে এ সুবিধা নিতে পারবেন।
এদিকে সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সব ভিআইপির সুরক্ষা দেবে আনসারের প্রটেকশন গার্ড রেজিমেন্ট। এ উদ্দেশ্যে আনসার–ভিডিপিতে একটি প্রটেকশন গার্ড রেজিমেন্ট তৈরি করা হয়েছে। সব ভিআইপি, মন্ত্রী, মন্ত্রীদের বাসা এবং কেপিআইভুক্ত স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব আনসারদের দেওয়া হবে। কোনো রাষ্ট্রদূত চাইলে তাঁদের এ সুবিধা দেওয়া হবে।