কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় বন রক্ষায় অভিযান চালাতে গিয়ে মাটি পাচারকারীদের ডাম্পারের (মিনি ট্রাক) চাপায় খুন হয়েছেন বনবিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান (৩০)। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় ফরিদ আলমের দোকানের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
সাজ্জাদুজ্জামান কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে। বনকর্মীরা জানান, ডাম্পারটি হরিণমারা এলাকার ছৈয়দ করিম নামে একজনের। বাপ্পি নামের এক যুবক ডাম্পারটি চালাচ্ছিলেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বলেন, গভীর রাতে হরিণমারা পাহাড় কেটে ডাম্পারে ভরে বালু পাচার হচ্ছিল। খবর পেয়ে সাজ্জাদুজ্জামান মোটরসাইকেলচালক মো. আলীকে (২৭) নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় বালু পাচারকারীরা ডাম্পার দিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী সাজ্জাদ ও আলীকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যান। এতে মাথা ফেটে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান সাজ্জাদ। গুরুতর আহত অবস্থায় উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তার চালক আলীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বনকর্মীরা জানান, ডাম্পারটি হরিণমারা এলাকার জনৈক ছৈয়দ করিমের। বাপ্পি নামের এক যুবক ডাম্পারটি চালাচ্ছিলেন তখন। বনকর্মীরা জানান, ইচ্ছাকৃতভাবে চালক ছৈয়দ করিম বিটকর্মীর মোটরসাইকেলে চাপা দেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন বিভাগে যোগদান করেন সাজ্জাদুজ্জামান। তিনি এক কন্যাসন্তানের জনক।
এদিকে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন। এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, পাশের উপজেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে ওই ডাম্পারটি আটক করেছে জনতা। তবে চালক ও সহকারী এখনো পলাতক রয়েছেন।
আজ কক্সবাজার বন বিভাগের কার্যালয় প্রাঙ্গণে নিহত বন কর্মকর্তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। এরপর ময়নাতদন্তসহ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লাশ স্বজনদের হস্তান্তর করা হবে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসাইন বলেন, সাজ্জাদুজ্জামানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে এলাকার অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।