রাজধানীর মিরপুর থানার আরেকটি হত্যা মামলায় সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক আজ রোববার সকালে এ আদেশ দেন।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ১৫ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। পরে তাঁকে সিয়াম সরদার (১৭) নামের এক কিশোর খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আজ সকাল সাড়ে সাতটার পর আসাদুজ্জামান নূরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাঁকে মিরপুর থানায় দায়ের করা মামুন মিয়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে মিরপুর থানা-পুলিশ। আদালত পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এ সময় আসাদুজ্জামান নূরের জামিন চান তাঁর আইনজীবী লিয়াকত হোসেন।
আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়, আসাদুজ্জামান নূর অসুস্থ। তাঁর বয়স ৭৮ বছর। তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া অ্যাজমা ও ডায়াবেটিস রয়েছে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের বক্তব্য শুনে আসাদুজ্জামান নূরের জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার কাগজপত্রের তথ্যমতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মামুন মিয়া। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে আসামি করা হয়।
গত ১৮ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকায় সিয়াম সরদার নামের এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।
মামলায় বলা হয়, ১৮ জুলাই মিরপুর ১০-এ আবু তালেব স্কুলের সামনে রাত ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা মিছিল করছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালান। এতে সিয়াম সরদারের শরীরে গুলি লেগে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। এই মামলায় সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের নাম রয়েছে।
আসাদুজ্জামান নূর বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখ। নাট্য অভিনেতা হিসেবে খ্যাতিমান আসাদুজ্জামান নূর ২০০১ সালে প্রথম আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আসাদুজ্জামান নূর সংস্কৃতিমন্ত্রী হয়েছিলেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষ পর্যায়ের বিভিন্ন পেশার অন্তত ৩৭ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।